
প্রকাশিত: ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:৩৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
রাজনৈতিক প্রতিবেদকঃ
প্রশাসন বিএনপির পক্ষে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছে এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম।
অন্যদিকে উল্টো অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটি বলেছে, প্রশাসনের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধীদেরই সখ্যতা সবচেয়ে বেশি।
আর নাহিদ ইসলামের বক্তব্যকে ‘পলিটিক্যাল রেটরিক’ বা ‘রাজনৈতিক বাগাড়ম্বর’ বলেও বর্ণনা করেছেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি'র (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের অনেক জায়গায় প্রশাসন এখন বিএনপির পক্ষে কাজ করছে।
তাই এ ধরনের প্রশাসনের অধীনে নির্বাচন করা সম্ভব নয়।
গত বুধবার ঢাকায় সফররত যুক্তরাষ্ট্রের দুজন উপসহকারি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে ওই বক্তব্য দেন তিনি।
এছাড়া এমন এক প্রেক্ষাপটে এনসিপি’র এই নেতা এ ধরনের বক্তব্য দিলেন, যখন নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান দৃশ্যমান হচ্ছে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য এই বক্তব্য দেওয়া হয়েছে বলে তারা মনে করেন। তিনি বলেছেন, প্রশাসনের সাথে বৈষম্যবিরোধীদের সখ্যতা সবচেয়ে বেশি।
এনসিপির নেতারা মনে করেন, গত বছরের পাঁচই অগাস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিএনপি সমর্থকরা জায়গা করে নিয়েছে। ফলে প্রশাসন ও পুলিশসহ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে নির্বাচনে বিএনপি এক ধরনের সহযোগিতা পেতে পারে।
এ ধরনের চিন্তা থেকে নাহিদইসলাম যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে এনসিপির অবস্থানেরই প্রতিফলন হয়েছে বলে দলটির নেতারা মনে করেন।
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব এ ব্যাপারে বলেন, পরবর্তীতে ক্ষমতায় কে আসবে, বাংলাদেশের আমলাতন্ত্র সে অনুযায়ী কাজ করে। এরা (আমলারা) সবসময় একটি আশ্রয়ে থাকতে চায়।
আওয়ামী লীগ আমলাদেরকে এতদিন ধরে আশ্রয় দিয়েছে। তাই আমলারা আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করে গেছে বলেও উল্লেখ করেন এনসিপির ওই নেতা।
তিনি আরও বলেন, বড় দল হিসাবে পরবর্তীতে বিএনপির-ই ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা আছে।
তাই, প্রশাসন দেখলো যে সরকার দ্রুত নির্বাচন দিলে ক্ষমতায় আসবে বিএনপি। সে কারণে বিএনপির সাথে তারা এক ধরনের দর কষাকষির মাঝে গেছে। প্রশাসন মানে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো। তাদের বিএনপির প্রতি নমনীয় আচরণ শুরু হয়েছে।
নাহিদ ইসলাম বলেছিলেন, কোনও ধরনের পরিবর্তন বা মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের দিকে গেলে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। পাশাপাশি, সেই নির্বাচনে জাতীয় নাগরিক পার্টি অংশগ্রহণ করবে কি না, বিবেচনাধীন থাকবে।
তিনি বলেন, প্রশাসন দেখছি বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির পক্ষ অবলম্বন করছে। মাঠ পর্যায়ে যে চাঁদাবাজি চলছে, সেখানেও প্রশাসন নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করছে। আমরা বলেছি, এ ধরনের প্রশাসন থাকলে এর অধীনে নির্বাচন করা সম্ভব নয়।
একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের জন্য একটি নিরপেক্ষ প্রশাসন, পুলিশ, আমলাতন্ত্র আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, নাহিদ ইসলাম সঠিক কথা বলেননি। যা বলেছেন, তা মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য। কোনও দেশে যারা সরকারে থাকে, প্রশাসন বা অ্যাডমিনিস্ট্রেশন হয় তাদের নামে।
যেমন, ট্রাম্প অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এটি ইউনূস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন।
তিনি আরও বলেন, সেক্ষেত্রে আমরা যতটুকু জানি, বাংলাদেশের প্রশাসনের সাথে ছাত্রদের তথা বৈষম্যবিরোধীদের সখ্যতা সবচেয়ে বেশি। তারা বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে নজরদারি করে। এখন তাহলে এটা বিএনপি'র প্রশাসন হলো কী করে?
এদিকে, নাহিদ ইসলামের অভিযোগের ব্যাপারে সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় নি।
মন্তব্য করুন