
প্রকাশিত: ২২ এপ্রিল, ২০২৫, ০১:৩৯ এ এম
অনলাইন সংস্করণ
ইখতিয়ার উদ্দীন আজাদ, নওগাঁ প্রতিনিধি:
কে জানতো একদম গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে এসে রাজধানী ঢাকা এসে শিল্পীদের ভালোবাসার মধ্যমণি হবে?বলা হচ্ছে 'ইমরান হাসো'র কথা। "অভিনয়শিল্পী সংঘ বাংলাদেশ" কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন ২০২৫-২০২৮ এ সর্ব কনিষ্ঠ প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল ইমরান হাসো।চুড়ান্ত ভোটার ছিলো ৬৯৭,ভোট কাস্ট হয়েছে - ৫৫২
ইমরান হাসো ভোট পেয়েছে - ৪৫৮। যে শিল্পী সমিতির রেকর্ড। এরকম সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে নির্বাচিত খুব কমই আছে।এটা একটা রেকর্ড ইমরান হাসোর।আরো কিছু ভোট নষ্ট হয়েছে।
সেগুলোতেও ইমরান হাসোর ভোট ছিলো।৯ এপ্রিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হলো "অভিনয়ের সংঘের" ভোট।সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত ভোটের সময় ছিলো।
ভোট দিতে আসেন শিল্পী সংঘের অনেক জনপ্রিয় জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পীরা। মামুনুর রশীদ, জাহিদ হাসান,মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, নিলয় আলমগীর, সজল থেকে শুরু করে শত শত শিল্পীরা। ভোট দিতে এসে সবাই আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেছিল।
ভোটে সবার পছন্দের মানুষ ছিলো ইমরান হাসো। ইমরান হাসো নামটি শুনলেই সবার মধ্যে চলে আসে ছেলেটি ভীষণ সহজ সরল, সৎ, সাহসী, প্রতিবাদী এবং মানবতার সেবক বললেও ভুল হবে না।দেশের যে কোনো ক্রান্তিকালে সবার আগে এ-ইমরান হাসো কে দেখা যায়।
করোনার সময় সবার পাশে থাকা,ছাত্র আন্দোলনে রাজপথে থেকে লড়াই করেছেন, বন্যার সময় তার অবদান কেউ ভুলবে না। এটা সত্যি মনে রাখার মতো।
ফেনীতে যখন বন্যায় চারদিকে বন্ধি তখন ইমরান হাসো তার টিম কে নিয়ে গলা পর্যন্ত পানি সেখানে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন।শুধু ফেনী না দেশের যে যে জায়গায় বন্যা হয়েছে সেইসব জায়গায় তার অবদান ছিলো।
ফেনী,নোয়াখালী,লক্ষীপুর,কুমিল্লা, শেরপুরের নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী এবং হালুয়াঘাটে। রংপুর, লালমনিরহাট, নিলফামারী, কুড়িগ্রাম সহ বিভিন্ন জায়গায় সে দেড় মাসের মতো সময় বাহিরে ছিলেন।শিল্পীদের স্বার্থে যে কোনো কাজে তাকে আগে দেখা গেছে।
প্রতিবাদে যেন সবসময় এগিয়ে থাকে ইমরান হাসো।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তোফাজ্জল কে মারা হয়। সেটার প্রতিবাদও সে অনেকদিন ধরে করেছে। কয়েকদিন আগে আছিয়া কে নিয়ে সে নূর হোসেন সেজে প্রতিবাদ করেছে।ইমরান হাসো জন্ম হয়েছে মনে হয় প্রতিবাদ করার জন্য।
১৯৯৭ সালে নওগাঁ জেলার পত্নীতলা থানার শিহাড়া ইউনিয়নের আমন্ত গ্রামে জন্মগ্রহণ করে ইমরান হাসো। ছোট বেলা থেকেই এলাকায় সে জনপ্রিয়। তার সুন্দর আচরণ এবং ভালো ভালো কাজ দিয়ে।
স্কুলে পড়াকালীন ইমরান হাসো ছিলো সবার পছন্দের। যে কোনো অনুষ্ঠানে তার জন্য একটা পুরষ্কার একদম বরাদ্দ থাকতো।খেলাধুলায় সে ভালো করতো। আন্ত থানা স্কুল ক্রিকেট খেলায় ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হওয়ার পুরষ্কার এখনো ঘরে সাজানো।
বিতর্ক অনুষ্ঠানে জেলা পর্যায়ে রানার্স আপ হয়েছে।স্বপ্ন ছিলো আইনজীবী হবে। পরে হয়ে গেল অভিনেতা। স্কুলে সাইন্সে এসএসসি পরীক্ষা দেয়। ২০১৪ সালে।
এরপর কলেজে ভর্তি হন।তারপর শুরু হয় তার পরিচিত মাধ্যমে তাকে নিয়ে কথা।২০১৫ সালে বাংলাদেশের একমাত্র কমেডি রিয়েলিটি শো হা- শো সিজন৩ তে সে অডিশন দেন এবং সিলেক্ট হন।
এরপর শুরু হয় পথচলা। তারপর এইচএসসি পরীক্ষা শেষ করে ঢাকায় চলে আসে ১৭ সালে। "থিয়েটার এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ" বিভাগে অনার্স শেষ হয়েছে ইমরান হাসোর। ২০১৮ সালে রঙ্গনা নাট্যগোষ্ঠীর দলে ভর্তি হন।
তারপর নিয়মিত নাটক এবং সিনেমায় অভিনয় শুরু করেন। বর্তমানে ইমরান হাসোর সিনেমা মোট ২৭ টি এবং নাটক ৫ শতাধিক।
উল্লেখ্য সিনেমা-
১-সুলতানপুর
২- লাল শাড়ি
৩- শান
৪- জ্বীন- ৩
উল্লেখযোগ্য নাটক-
১- বকুলপুর ধারাবাহিক নাটক
২- অচিনপুর ধারাবাহিক নাটক
৩-তাফালিং
৪- আদম
৫- জলকুমারী
৬- মফিজ এখন ঢাকায়
৭- তোফাজ্জলের শেষ ভাত সহ অগণিত নাটকে অভিনয় করেছে ইমরান হাসো।পরিবারের বড় সন্তান ইমরান হাসো। সবার পছন্দের এবং আদরের ইমরান হাসো।
ইমরান হাসো নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরে বলেন-'আমি বিগত সময়ে আমার শিল্পীদের কাজে ছিলাম। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করেছি এবং সংগঠনের যে কোনো কাজে আমাকে আমার শিল্পীরা পাশে পেয়েছেন।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি কথা দিচ্ছি আমি আমার শিল্পীদের সন্মান ধরে রাখবো ইনশাআল্লাহ। আমাকে সর্বোচ্চ ভোট দিয়ে ঋণী করে ফেলেছেন শিল্পীরা। কারণ, আমি আমার পডিবারের পর সবচেয়ে বেশী ভালোবাসা পেয়েছি অভিনয়শিল্পী সংঘের সদস্যদের কাছে।
আমি মুগ্ধ। দোয়া করবেন আমার জন্য। যেন আমি আমার দায়িত্ব পালন করতে পারি।'ইমরান হাসো কার্যনির্বাহী সদস্য পদে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে বিজয়ী। ৪৫৮ ভোট যা ইমরান হাসো সবাই কে চমক দেখিয়েছে।
মন্তব্য করুন