
প্রকাশিত: ১২ জুলাই, ২০২৪, ০৮:৫৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পিএসসির দুজন উপ-পরিচালক, একজন সহকারী পরিচালকসহ ১৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাদের অন্যতম প্রিয়নাথ রায়। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত প্রিয়নাথের দিনাজপুর ও ঢাকায় বাড়ি-গাড়িসহ অঢেল সম্পত্তি রয়েছে। তবে নিজের এলাকায় খোজ পাওয়া যায়নি তেমন কোনো সম্পদের। এখনও একটি জরাজীর্ণ বাড়িতেই বসবাস করেন প্রিয়নাথের বৃদ্ধা মা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের রাইতু রায় ও রাজবালা দম্পতির সন্তান প্রিয়নাথ রায়।তিনি চার ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়। অভাবের সংসারে বেড়ে ওঠা প্রিয়নাথ এসএসসি পরীক্ষার সময় হারান বাবাকে। এইচএসসি’র পরে বন বিভাগে চাকরি নেন। ডিগ্রি পাস করে সেনাবাহিনীর অডিটর পদে যোগ দেন। একটা সময় জড়িয়ে পড়েন চাকরি প্রশ্নফাঁস চক্রের সাথে। চাকরি দেয়ার নাম করে অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন প্রিয়নাথ। জড়িয়েছেন মামলায়ও। মামলার পর থেকে তাকে গ্রামে আসতে দেখেননি পড়শিরা।
স্থানীয়রা জানান,পরীক্ষার আগেই প্রায় ৪৫০ জনকে প্রশ্নপত্র দিয়ে চাকরি পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করা এই প্রিয়নাথ আগেও বিভিন্ন চাকুরী পাইয়ে দিতে টাকার লেনদেন করতেন। চাকরি দেয়ার শর্তে একেক জনের সাথে চুক্তি করতেন ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকায়। এসব করতে গিয়ে অনেকের কাছে টাকা নিয়ে চাকুরী দিতে পরেন নি। এসব বিষয়ে ৫ বছর আগে তার নামে মামলাও হয়। তখন থেকে তিনি আর ঠাকুরগাঁওয়ে আসেননি। নেন নি নিজের মায়ের খোঁজখবর।
গ্রামের বাড়িতে একা থাকেন প্রিয়নাথের বাড়িতে। অপকর্মে ছেলের জড়িয়ে পড়ায়, দায়ী করলেন পুত্রবধূকে। তবে দোষী হলেও ছেলের মুক্তি চান তিনি৷
প্রিয়নাথের মা রাজবালা বলেন, দীর্ঘ ৫ বছর থেকে আমি ছেলের মুখ দেখিনি। জানিনা ছেলে কি করে কোথায় থাকে। এতকিছু শোনার পরে এখন ভয় হয়। ছেলের মুখ আর দেখতে পারবো কি না। মৃত্যুর আগে একটাবার ছেলের মুখখানি দেখতে চাই।
জয়দেব নামে একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, প্রিয়নাথের পরিবারে মা ছাড়া তারা সবাই ঠাকুরগাঁওয়ের বাইরে থাকে। এখানে ওর মা ছাড়া কেউ থাকেনা। শুধু শোনেছি চাকরী দেয়ার নামে সে টাকা নিত। পুলিশও এসেছে অনেকবার। কিন্তু সে অনেকদিন ধরে বাড়িতে আসেনি। এখন দেখছি এমন কর্মকান্ড।
আরেক প্রতিবেশী শামসুজ্জোহা জানান, এলাকার সবাই প্রিয়নাথকে ছিচড়ে চিটার বাটপার হিসেবেই জানে। তবে সে যে এতবড় কাণ্ডের সাথে জড়াতে পারে তা আমরা কেউ ভাবতে পারিনি।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বি এম ফিরোজ ওয়াহিদ বলেন, চাকরি দেয়ার নাম করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে বিভিন্ন জেলায় রয়েছে প্রিয়নাথের নামে একাধিক মামলা।কিন্তু কয়েক বছর ধরে সে বাড়িতে আসেনা।
মন্তব্য করুন