প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বার, ২০২৫, ০৩:৩৮ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

প্রশাসনিক গড়িমসি ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে চিলমারীর স্কুল নির্মাণ অনিশ্চিত

 

 

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:


কুড়িগ্রামের চিলমারীতে শাখাহাতী ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পুনর্নির্মাণ নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েনে দেড়শ শিক্ষার্থী এক বছরেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। ভয়াবহ নদীভাঙনে বিদ্যালয়টি বিলীন হওয়ার পর নতুন স্থান নির্ধারণে প্রশাসনের তিন দফা পরিদর্শন হলেও রাজনৈতিক প্রভাব ও দ্বন্দ্বের কারণে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের জন্য স্থান নির্ধারণে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমানের বিরোধিতা এবং সুবিধাভোগীদের স্বার্থ রক্ষার কারণে প্রক্রিয়া আটকে আছে। এরই মধ্যে দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের সুযোগ কাজে লাগিয়ে তৃতীয় পক্ষ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার জায়গায় বিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নিয়ে জমির দলিলও সম্পন্ন করেছে। বিষয়টি জানতেন না এলাকাবাসী। সম্প্রতি উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি আ. মান্নান সেখানে খুঁটি স্থাপন করতে গেলে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়ে সরে আসেন।

অভিভাবক লুৎফর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলা হচ্ছে। এতদিন ধরে তাদের পড়াশোনা বন্ধ থাকা মেনে নেওয়া যায় না।”

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, স্কুলের জিনিসপত্র নষ্ট হচ্ছে, অথচ শিশুদের পড়াশোনা বন্ধ। এটি শুধু অবহেলা নয়, রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়ও। বিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষক বাধ্য হয়ে পাশের মোনতোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সময় কাটাচ্ছেন, যেখানে পড়ানোর মতো শিক্ষার্থী নেই। এতে শিক্ষকরা হতাশ এবং শিক্ষার্থীরা প্রাপ্য শিক্ষা থেকে বঞ্চিত।

চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “নদীভাঙনে বিদ্যালয় হারানো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হতে পারে, কিন্তু পুনর্গঠন আটকে রাখা পুরোপুরি মানবসৃষ্ট সমস্যা। রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে একটি প্রজন্মের শিক্ষা বন্ধ থাকা জাতির জন্য অশনিসংকেত।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সবুজ কুমার বসাক বিদ্যালয়ের সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন করেছেন, তবে সিদ্ধান্তহীনতায় কাজ আটকে আছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. কামরুজ্জামান জানান, “দুই পক্ষের বিরোধের কারণে মাঝামাঝি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। জমির রেজিস্ট্রি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।”

স্থানীয়রা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে বিদ্যালয় নির্মাণ কাজ শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে শিশুদের শিক্ষাজীবন আর ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

 


মন্তব্য করুন