প্রকাশিত: ১৫ নভেম্বার, ২০২৪, ১১:৩৮ এ এম

অনলাইন সংস্করণ

শ্রীপুরের রাজনীতি : ভিক্ষা দিসনে কুকুর ঠেকা

 

সদরুল আইন:

              রাজধানী ঢাকা সংলগ্ন শিল্পনগরী গাজীপুর দ্বিতীয় গোপালগঞ্জ নামে খ্যাত।এক কথায় বলা চলে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি এই জনপদ। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সেই দৃশ্য বদলে গেছে।

কয়েক মাস আগেও যেসব নেতা ছিলেন ক্ষমতার পাদপ্রদ্বীপে,যাদের প্রতাপ আর প্রভাবের দাপটে এই জনপদের মাটি ধূলো হয়ে উড়তো, তাদের টিকিটিও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না আজ।

এক কথায় বলা চলে সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে হামলা মামলায় জর্জরিত এই এলাকার সাবেক বর্তমান এমপিগণ,চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা কর্পূরের মত হাওয়ায় মিলিয়ে গেছেন।

এতিম কর্মিরা গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে।এসব নেতারা ভুলেও খোঁজ নেয়নি কর্মিরা কোথায় আছে,কি খাচ্ছে আর তাদের পকেটে পয়সা আছে কি না।

একদিকে আওয়ামী লীগের ডাকসাইটে নেতারা যেমন জনগন ও কর্মিদের পাশে নেই ঠিক অপরদিকে এলাকটি কব্জায় নিয়ে দখল বাণিজ্যে মেতেছে বিএনপি নেতারা।

বিএনপির নেতারা মনে করছেন তারা ক্ষমতার পাদপ্রদ্বীপে চলে এসেছেন অথবা রাষ্ট্র ক্ষমতায় তারাই আছেন।এ কারনে রাজনীতির ফাঁকা মাঠ দখলের পাশাপাশি মিল ইন্ডাস্ট্রিসহ অর্থনৈতিক জোনগুলোসহ স্কুল কলেজের ম্যানেজিং কমিটিগুলো দখলে নিয়ে নিজেদের কুৎসিত কদাকার চেহারা প্রদর্শণের হোলি উৎসবে মেতেছেন বেশিরভাগ নেতা।

বিশেষ করে এরা ইচ্ছে মত নাম দিয়ে মামলা দিচ্ছে,ইন্ডাস্ট্রি দখল করে ঝুট ব্যবসায় মেতেছে, তৃণমূলের প্রতিপক্ষের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে বাড়ি ছাড়া করেছে শত শত মানুষকে এমন অভিযোগ সর্বত্রই।

তাই প্রাশ্চয়ই লোকমুখে আলোচিত হচ্ছে সরকার পরিবর্তন হলেও নেতাদের চরিত্রে পরিবর্তন আসেনি। দল ও নেতা পরিবর্তন হয়েছে সত্য কিন্তু নেতাদের আসল চরিত্রের পরিবর্তন ঘটেনি।অর্থাৎ স্বার্থ ও আখের গোছানোর প্রশ্নে সব দলের নেতাদের চরিত্র এক এবং অভিন্ন।অর্থাৎ যে লাউ, সেই কদু।

এখানকার রাজনৈতিক সচেতন মানুষ বলছে, যেসব নেতা ক্ষমতায় ছিলেন, মন্ত্রী এমপিসহ জনপ্রতিনিধি হয়েছিলেন,রাজনৈতিক শীর্ষ পদগুলো দখলে নিয়ে৷ রাজনৈতিক মঞ্চের চেয়ার আলোকিত করে রাখতেন,যেকোন পরিস্থিতিতে জনগনের জন্য জীবন দেবেন বলেন বড় বড় বক্তব্য দিতেন,তারাই আজ পটপরিবর্তনে, ক্রান্তিকালে আত্মগোপনে।

এমনকি কর্মিদের এই বেহাল দশায় সহমর্মিতা তো দুরে থাকুক তারা তাদের অবস্থান পর্যন্ত গোপন রেখেছেন নিজেদের গ্রেফতারের ভয়ে এবং কর্মিদের দাবি এড়াতে।

এই জনপদের সাধারন মানুষ বলছে, ভবিষ্যতে আর যাই হোক এসব নেতারা জনগণের দুয়ারে এসে দাঁড়াতে পারবেন না যদি তাদের মধ্যে নূন্যতম আত্মসম্মানবোধ থাকে।অনেকেই বলছেন, দূর্দিনে যেসব নেতা পালিয়ে যান তারা সত্যিকার অর্থে জনগনের সেবক ছিলেন না।
তারা ছিলেন আখের গোছানোর ধান্ধাবাজ, রাজনৈতিক মোড়কে ঢাকা ভন্ড প্রতারক।

তারা বলছেন, সত্যিকারের রাজনৈতিক নেতা বা জনসেবক কখনো দূ:সময়ে পালিয়ে যান না বা আত্মগোপণে থাকেন না।তারা যে কোন পরিস্থিতিতে কর্মিদের পাশে থাকেন,উৎসাহ ও সাহস যোগান।

তাই গাজীপুর-৩ আসনের অধিকাংশ মানুষ মনে করছে অতীতে যেসব নেতা জনসেবক সেজে বড় বড় বুলী আওড়াতেন তাদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের অবসান ঘটেছে।কারন তারা যে জনবান্ধব নেতা ছিলেন না তা প্রমানীত।

আগামী দিনের শ্রীপুর নতুন নেতৃত্ব প্রত্যাশা করছে।এখানকার মানুষ এখন আলোকিত দিন ও আলোকিত নির্লোভ রাজনৈতিক নেতার আবির্ভাবের জন্য অপেক্ষা করছে।তারা নতুন কোন ঝলমলে ভোরের স্পর্শ পেতে এখন উন্মুখ।

মন্তব্য করুন