
প্রকাশিত: ১৭ জুলাই, ২০২৪, ০৬:৫২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
বগুড়া শেরপুরে কোটা বিরোধীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বুধবার সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এই সংঘর্ষ চলে। এতে ঢাকা বগুড়া মহসড়কে জান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সারাদেশে চলমান কোটা বিরোধী আন্দোলনে সংহতি জানাতে মঙ্গলবার রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপ থেকে আজকের কর্মসূচির কথা জানানো হয়। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার সকাল ১১ টা থেকে শেরপুর শহীদি আলিয়া মাদ্রাসার সামনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সমবেত হতে থাকে। তারা মিছিল শুরু করতে চাইলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। পরে বেলা বাড়ার সাথে সাথে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। তারা মিছিল নিয়ে ধুনট মোড়ে থেকে মিছিল নিয়ে বাসস্ট্যান্ডের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে আবারও পুলিশ তাদের বাধা দেয়। মুহুর্তের মধ্যেই আন্দোলনকারীদের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যায়। তাদের প্রতিবাদের মুখে পুলিশ পিছু হটে। শিক্ষার্থীদের মিছিল মহাসড়ক অবরোধ করে বাসস্ট্যান্ড হয়ে উপজেলা পরিষদের সামনে ঘুরে আবারও শেরুয়া বটতলার দিকে যায়। প্রচন্ড গরমে প্রায় ৫ কিলোমিটার মিছিল করে আন্দোলনকারীরা ক্লান্ত হয়ে যায়। এসময় পুলিশ ধুনট মোড়ে অবস্থান নেয়। প্রায় আধা ঘন্টা পরে শিক্ষার্থীরা আবারও ধুনট মোড়ে এসে মহাসড়ক অবোরধ করে। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শিক্ষার্থীদের শ্লোগানে চারিদিক মুখরিত হয়। এসময় শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন জিহাদী, বগড়ার শেরপুর সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার সজীব শাহরিন, শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম সহ পুলিশ সতর্ক অবস্থা নেয়। তারা আন্দোলনকারিদের মহাসড়ক থেকে সরে যেতে বলে। শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থানে অনড় থাকলে পুলিশ লাঠি চার্জ শুরু করলে সংঘর্ষ শুরু হয়।
সংঘর্ষ শুরু হলে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীরা পুলিশের দিকে ঢিল ছুড়তে শুরু করে। এসময় শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম আহতে হলে তাকে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশও পাল্টা রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও শটগানের গুলি ছোড়ে। এতে প্রায় ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। এছাড়াও রুহুল আমিন নামে একজন সাংবাদিক, তিনজন পুলিশ সদস্য ও বেশকিছু পথচারি ঢিলের আঘাতে আহত হয়। এখন পর্যন্ত তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এপর্যায়ে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারিরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পুলিশ ধুনট মোড়ে অবস্থান নিলে শিক্ষার্থীরা আবারও বাসস্ট্যান্ডে মহাসড়ক অবরোধ করে। পুলিশ আবারও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপরে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কোটা বিরোধী আন্দোনকারী জানান, মঙ্গলবার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার কারণে আজ ভোরে তাদের তিন জনকে পুলিশ উঠিয়ে নিয়ে যায়। পরে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আজকে মতো তাদের কর্মসূচী সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তবে তাদের এই বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যহত থাকবে।
এ বিষয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন জিহাদী বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শেরপুর থানার পাশাপাশি বগুড়া থেকে এক প্লাটুন পুলিশ ও এক প্লাটুন র্যাব মাঠে আছে। জানগণের জানমালের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও শটগানের গুলি ব্যবহার করেছে। সব কিছু প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে আছে।
মন্তব্য করুন