
প্রকাশিত: ৩০ জুলাই, ২০২৪, ০৮:৩৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
রংপুরের মিঠাপুকুরে মাদক ও জুয়া খেলার প্রতিবাদ করায় আরিফুল ইসলাম নামে এক যুবককে লোহার রড দিয়ে পিটিয়েছেন একই এলাকার মাদক ও জুয়ার আসর বসানোর সিন্ডিকেটের সদস্যরা। হাসপাতালে চিকিৎধীন আরিফুল ইসলাম (৩০) উপজেলার শাল্টিগোপালপুর ইউনিয়নের শাল্টি ছমিল এলাকার মোশারফ মন্ডলের ছেলে। এ ঘটনায় হামলার শিকার আরিফুল বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় এজাহার দিয়েছেন। তবে পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিঠাপুকুর মানবাধিকার সংগঠনের কর্মী ও সুশীল সমাজে ব্যপক সমালোচনা চলছে। মাদক এবং জুয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে হামলার শিকার আরিফুলের উপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন সুশীল সমাজ।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার শাল্টি গোপালপুর ইউনিয়নে মাদক ও জুয়ার রমরমা কারবার চলে। ইউনিয়নটিতে বন বিভাগের বিশাল এলাকা জুড়ে সরকারি গাছের বাগান রয়েছে। সেখানে প্রকাশ্যেই বসে জুয়ার আসর। এমনকি হাত বাড়ালেই মিলে ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাজাসহ বিভিন্ন মাদক। এর ফলে স্থানীয় যুবসমাজ দিন দিন ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। প্রতিবাদে আরিফুলসহ কিছু সচেতন যুবক মাদক ও জুয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেন। এর আগে মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে মানববন্ধনও করেন তারা। পরে নড়েচড়ে বসেন প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে গত রবিবার (২৯ জুলাই) বিকালে ছমিল বাজার এলাকার একটি আম বাগানে জুয়া খেলা অবস্থায় আনারুল ইসলাম নামে এক জুয়াড়িকে গ্রেফতার করেন মিঠাপুকুর থানা পুলিশ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করেঅভিযুক্ত মাদক ও জুয়া সিন্ডিকেটের সদস্যরা পুলিশকে তথ্যদাতা হিসিবে আরিফুল ইসলামকে সন্দেহ করেন। সেই সুত্র ধরে জুয়াড়ি সিন্ডিকেটের সদস্যরা সোমবার (৩০ জুলাই) রাত সাড়ে ৭ টার দিকে শাল্টি ছমিল বাজারের রেজাউলের দোকানের সামনে আরিফুলকে বেধড়ক মারপিট করেন। একপর্যাকে অভিযুক্ত সোহেল, সাহেব, তুহিন, লিমন, মোকছেদ, ওয়াজেদ ও মোজাহারুলসহ কযেকজন তাকে ঘিরে ফেলে লোহার রড দিয়ে পেটাতে থাকেন। এসময় আরিফুলের আত্মচিৎকারে বাজারের লোকজন এগিয়ে আসলে দলবদ্ধ সিন্ডিকেট সদসস্যরা তখন বিভিন্ন হুমকি দিয়ে
সেখান থেকে পালিয়ে যান। পরে আশংকাজনক অবস্থায় আরিফুলকে উদ্ধার করে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়।
হামলার শিকার আরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের এলাকা মাদক ও জুয়ায় ভরে গেছে। সকাল হতেই রাবার বাগানে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত জুযাড়িরা জুয়ার আসর বসান। সেখানে স্থানীয়রাও জুয়া খেলে সব্বোস্ব হারাচ্ছেন সংসারে অশান্তি বাড়ছে। যুবকরা মাদকাসক্ত হচ্ছে। আমি প্রতিবাদ করায় আমার উপর সংঘবদ্ধভাবে তারা হামলা চালিয়েছে। আমি সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা পলাতক থাকায় বক্তব্য তাদের পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন মিঠাপুকুর উপজেলা শাখার সভাপতি আশিকুর রহমান মন্ডল জানান, আরিফুলের উপর মাদক ও জুয়াড়িড়া যেভাবে হামলা চালিয়েছে সেটা খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি নিয়ে ওসি সাহেবের সাথে কথা হয়েছে। জড়িতদের আইনের আওতায় বিচার নিশ্চিত করার জন্য আমরা পাশে আছি। মাদক ও জুয়ার বিরুদ্ধে সবাইকে ঐকবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, অভিযোগ পেয়েছি বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন