তাড়াইল (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২ মার্চ, ২০২৪, ০৫:২৫ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

তাড়াইলে কৃষকদের জনপ্রিয় হচ্ছে পার্চিং পদ্ধতি

ছবি সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে বোরো ধানের ক্ষতিকারক পোকা দমনে কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে পরিবেশ বান্ধব জৈব বালাই দমন পদ্ধতি বা পার্চিং পদ্ধতি। ধান উৎপাদনের অন্যতম উপজেলা তাড়াইলে বোরো ধানের জমিতে  দিন দিন এ জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে চাষীরা এ পদ্ধতির দিকে বেশি ঝুঁকছেন। একদিকে যেমন বিষমুক্ত পদ্ধতিতে পোকা দমন হচ্ছে অন্যদিকে রক্ষা পাচ্ছে পরিবেশ।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ১০ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ মৌসুমে প্রতি হেক্টরে পাঁচ থেকে ছয় টন ফলন পাওয়ার আশা করছেন সংশ্নিষ্টরা।  

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন,পার্চিং মানে ক্ষেতে ডালপালা পুঁতে দেওয়া। ফসলের জমিতে ডাল, কঞ্চি, বাঁশের খুঁটি এগুলো পুঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করলে ক্ষতিকারক পোকার মথ, বাচ্চা, ডিম খেয়ে পোকা দমন করে। মূলত ফিঙে, শালিক, বুলবুলি, শ্যামা, দোয়েল, সাত ভায়রা এসব পাখি পার্চিংয়ে বসে পোকা ধরে খায়। ফসলের পোকা দমনের এ পদ্ধতি বলতে গেলে ব্যয়বিহীন ও পরিবেশবান্ধব। ফসলের ক্ষেতে ডেড পার্চিং ও লাইভ পার্চিং দুটিই করা যায়। মরা ডালপালা পুঁতে দিলে তা হবে ডেড পার্চিং। আর ধঞ্চে, অড়হর এসব জীবন্ত গাছ জমিতে নির্দিষ্ট দূরত্বে লাগিয়ে দেওয়া হলো লাইভ পার্চিং। প্রতি বিঘাতে অন্তত ৪/৫ টি বাঁশের আগা, কঞ্চি বা ডাল পুঁততে হয়। ফসল রোপণের পরপরই পার্চিং স্থাপন করতে হয়। ফসলের সর্বোচ্চ উচ্চতা থেকে কমপক্ষে এক ফুট উচ্চতায় পার্চিং করা উচিত বলে তাঁরা জানান।পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় আমরা চাষিদেরকে নিয়মিত পার্চিং ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছি। 

সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জমিতে দেখা যায় পার্চিংয়ের দৃশ্য। এবিষয়ে কথা হয় তালজাঙ্গা ইউনিয়নের আড়াইউড়া গ্রামের কৃষক নব কুমার তালুকদারের সাথে। তিনি জানান, তিনি তার ইরি-বোরো জমিতে পার্চিং পদ্ধতি শুরু করেছেন। প্রতিবছরই তিনি এ পদ্ধতি অবলম্বন করেন। এতে কীটনাশক কম লাগে ফলে খরচ কম হয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুমন কুমার সাহা বলেন, ক্ষতিকর পোকা বিশেষ করে মাজরা পোকা ধানের ক্ষতিকর। আর পাখিদের প্রিয় খাবার এই মাজরা পোকা। তাই পার্চিং পদ্ধতি খুব কার্যকর। এই পদ্ধতি কাজে লাগালে কীটনাশকের ব্যবহার কমে যায়। উৎপাদন খরচও কমে। বালাইনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখা যায়। এ পদ্ধতি ক্রমেই বাড়ছে। তিনি আরো বলেন, এ বছর এখন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ জমি পার্চিংয়ের আওতায় এসেছে। কিছুদিনের মধ্যে সেটা শতভাগের কাছাকাছি চলে যাবে।ফলে ফসলের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

 

মন্তব্য করুন