প্রকাশিত: ১৭ মার্চ, ২০২৫, ১১:৪৪ এ এম

অনলাইন সংস্করণ

কেরানীগঞ্জে ৫ ও দিনাজপুরে ১১ বছরের শিশু ধর্ষণের চেষ্টা : যশোরে ৪ বছর বয়সী শিশুর গলায় ছুরি ঠেকিয়ে মাকে ধর্ষণের চেষ্টা

 

সদরুল আইনঃ

রাজধানীর কেরানীগঞ্জে পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত এক কিশোরকে হেফাজতে নিয়েছে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা-পুলিশ। 

রোববার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে ভুক্তভোগী শিশুকে অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) ও হাসপাতলের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।

 পরে শিশুকে ঢামেক হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি দেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।

ভুক্তভোগী শিশুর ফুপু বলেন, ‘আমার পাঁচ বছর বয়সের ভাতিজি স্থানীয় একটি স্কুলে নার্সারিতে পড়ে। রোববার দুপুরে আটিবাজার সংলগ্ন একটি গ্রামে বাড়ির পাশে খেলার সময় অভিযুক্ত কিশোর তাকে ফুঁসলিয়ে ধর্ষণ করে। 

বাড়ি ফিরলে শিশুর রক্তক্ষরণে বাবা-মা বিষয়টি জানতে পারে। পরে অসুস্থ শিশুটিকে প্রথমে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) ও হাসপাতাল নেওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়।’

অভিযুক্ত কিশোরকে কেরানীগঞ্জ থানা-পুলিশ আটক করেছে বলেও জানান ভুক্তভোগী শিশুর ফুপু। তিনি বলেন, ‘ভুক্তভোগী শিশুর বাবা রাত থেকেই কেরানীগঞ্জ থানাতে আছেন।’

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সোহরাব আল হোসাইন জানান, মৌখিক অভিযোগে অভিযুক্ত কিশোরকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক বলেন, ভুক্তভোগী শিশুকে ঢাকা মেডিকেলের ওসিসিতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

দিনাজপুরে ১১ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত পরিবারসহ পালিয়ে গেছেন। 

ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতের বিচার দাবি করেছেন পরিবার ও স্থানীয়রা। রোববার (১৬ মার্চ) দুপুরে ঘটনার পর বিরল ও কোতয়ালী উভয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং ভুক্তভোগীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন।

জানা যায়, রোববার দুপুরের দিকে দিনাজপুরের সদর উপজেলার মাঝাডাঙ্গা নামক এলাকার ৩ শিশুকন্যা বাড়ীর পার্শ্ববর্তী ক্ষেতের মাঝখানে যায়। এ সময় একই এলাকার এক ব্যক্তি ১১ বছর বয়সী এক শিশুকন্যাকে পার্শ্ববর্তী নদীর স্লুইচগেটের নিচে ধর্ষণের চেষ্টা করে। 

এ সময় ওই শিশুকন্যার সঙ্গে যাওয়া দুই খেলার সাথী চিৎকার শুরু করলে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত। তাদের চিৎকার চেঁচামেচিতে এলাকাবাসীর জটলা সৃষ্টি হয়।

পরে সেটি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য ভিকটিমের পরিবারকে প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু এরইমধ্যে কোতয়ালী থানার পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। এ সময় ওই অভিযুক্তের তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করেন স্থানীয়রা।
 
শিশুটির বাবা জানান, কৃষিকাজ থেকে এসে তার মেয়ের শরীরে হাত দেওয়ার কথা শুনে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মারতে যান। সম্পর্কে খালু শ্বশুর হওয়ায় স্থানীয়রা বিষয়টি মীমাংসার জন্য আমাকে বলে। তবে এখন আমি চাই, আইন যেভাবে বলে সেভাবেই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে।
 
শিশুটির মা জানান, আমার মেয়ের সঙ্গে যাওয়া দুই জন শিশু আমাকে জানিয়েছে যে ওই ব্যক্তি সম্পর্কে দাদা হওয়ায় ব্রিজের পাড়ে যেতে বলে। মেয়েটা যাওয়ার পর তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দেয়। ওই সময় ওই দুই মেয়ে চিৎকার শুরু করে।
 
সদর উপজেলার ১নং চেহেলগাজী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) পাভেল ইমরান বলেন, এমন সালিশের কোনো বিধান নেই। আমি পুরো ঘটনা এখনও জানি না, দুই পক্ষের কাছেই শুনছি এবং স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করছি। 

ঘটনার পর ওই এলাকায় যান কোতয়ালী ও বিরল থানা পুলিশ। তবে যেখানে ঘটনা ঘটেছে সেটি বিরল থানাধীন হওয়ায় সংশ্লিষ্ট থানাতে ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। 

কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান জানান, মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে ধারণা করা হচ্ছে শ্লীলতাহানি। ঘটনাস্থল বিরল থানাধীন হওয়ায় তাদের বিরল থানায় অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। 

বিরল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস ছবুর জানান, এই ঘটনায় রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বিরল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে ভিকটিমের পরিবারকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়েছে। 

এদিকে যশোরে চার বছর বয়সী এক শিশুর গলায় ছুরি ঠেকিয়ে মাকে ধর্ষণের চেষ্টার করে তিন দুর্বৃত্ত। রোববার (১৬ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরতলীর বিরামপুর গাবতলায় এই ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্তদের মধ্যে ১৮ বছর বয়সী প্রতিবেশী হাসান আলী এলাকার মৃত আলমগীরের ছেলে। তিনি ভুক্তভোগীর ছোট ভাইয়ের বন্ধু। সেই সুবাদেই মাঝেমধ্যে ভুক্তভোগীর বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল। 

স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে অভিযুক্ত মোবাইল চার্জ দেওয়ার নামে ভুক্তভোগীর ঘরের দরজা খোলায়। দরজা খোলা সঙ্গেই ঘরে থাকা চার বছরের শিশুর গলায় ছুরি ধরে  মাকে ধর্ষণ চেষ্টা চালায়। 

পরে ভুক্তভোগী ওই নারীর চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে আসলে তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান অভিযুক্ত ও তার সহযোগীরা।

ভুক্তভোগীর পিতা জানান, বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে অভিযুক্ত এই কাণ্ড ঘটিয়েছে । ভুক্তভোগী ও শিশুকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছেন তিনি।

যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী বাবুল হোসেন জানান, ভুক্তভোগীর ছোট ভাইয়ের বন্ধুসহ অজ্ঞাত আরও দু'জন জড়িত রয়েছে । তাদের গ্রেপ্তারের অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। 

 দ্রুতই জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে। তবে এখনও কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি।

 

মন্তব্য করুন