পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৫ জুলাই, ২০২৪, ০৯:৫৫ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

ঈশ্বরদী নিহত ৫ বন্ধুর দাফন সম্পন্ন, পরিবারে শোকের মাতম

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পাবনার ঈশ্বরদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পাঁচ বন্ধুর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। নিহতদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। শুক্রবার (০৫ জুলাই) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ঈশ্বরদী উপজেলার আজমপুর ও ভারইমারি গ্রামে জানাজা নামাজ শেষে তাদের স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এর আগে স্বজনদেন আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিহতদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। সকাল ১০টার দিকে ঈশ্বরদী হাইওয়ে থানা থেকে মরদেহগুলো হস্তান্তর করা হয়। মরদেহগুলো নিয়ে বাড়িতে পৌঁছার পর এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

স্বজনদের বুকফাটা আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে এলাকার বাতাস। তাদের সান্তনা দেবার ভাষাও হারিয়ে ফেলেন প্রতিবেশীরা। একসাথে এতগুলো প্রাণের মৃত্যুর ঘটনা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তারা।

নিহত জাহিদের বাবা রেজাউল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে সন্ধ্যার পর বাড়িতেই ছিল। হঠাৎ তার এক বন্ধু এসে বাড়ির বাইরে ডেকে নিয়ে যায়। বাড়ি থেকে বের হওয়ার এক ঘণ্টা পরই খবর আসে জাহিদসহ পাঁচজন মারা গেছে। আমিসহ এলাকার লোকজন দৌড়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি জাহিদের মরদেহ।

এলাকাবাসী দুলাল হোসেন বলেন, একই গ্রামের চারজনসহ পাঁচজন তরুণের মৃত্যুতে এলাকার শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত পাঁচজনই বন্ধু ছিল। এদের চারজনের বাড়ি পাশাপাশি। এমন মৃত্যুতে গ্রামের মানুষ নির্বাক।

একই গ্রামের মুকুল হোসেন বলেন, এমন মৃত্যুর ঘটনায় আজমপুর গ্রামের মানুষ হতবাক ও বিস্মিত। এমন মৃত্যু আগে কখনো এ গ্রামের মানুষ দেখেনি। এদিকে নিহতদের পরিবারের খোঁজ নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা। শুক্রবার সকালে নিহতদের বাড়ি ঈশ্বরদী উপজেলার আজমপুর ও ভারইমারি গ্রামে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবীর কুমার দাস ও দাশুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বকুল সরদার। এ সময় তারা নিহতদের স্বজনদের গভীর সমবেদনা জানান এবং তাদের পাশে থাকতে সরকারি সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (০৪ জুলাই) দিবাগত রাত নয়টার দিকে প্রাইভেটকার নিয়ে বেড়াতে বের হয়ে ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া চিনিকলের সামনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সাথে ধাক্কায় মারা যান ৫ বন্ধু। এ ঘটনায় আহত ২ জন পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিহতরা হলেন-ঈশ্বরদী উপজেলার আজমপুর গ্রামের কবির ওরফে আনোয়ার হোসেনের ছেলে মাইক্রোবাস চালক বিজয় (২৩), রেজাউল করিমের ছেলে জিহাদ (১৬), ইলিয়াস আলীর ছেলে শিশির (১৫), মৃত মাসুম হোসেনের ছেলে সিফাত (১৫) ও ভাড়ইমারি গ্রামের ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে শাওন (১৫)।

আহত দুজন হলেন, জাপান আলীর ছেলে শাহেদ ওরফে জেটু (১৬) ও সুমন হোসেনের ছেলে নাইম (১৭)। নিহতদের মধ্যে প্রাইভেটকার চালক বিজয় ঢাকায় গাড়ি চালান। আর বাকি চারজন স্থানীয় একটি ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

মন্তব্য করুন