
প্রকাশিত: ৩১ মে, ২০২৪, ০৭:৫৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
পাথরঘাটায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দু’পক্ষের সমর্থকদের সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। হামলায় এনামুল হোসাইন নামক এক প্রার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত হওয়া ১০ জনকে পাথরঘাটা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে ৪ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আহতদের অধিকাংশই ছাত্রলীগ ও যুবলীগ এবং কাপ পিরিচ প্রতীকের সমর্থক রয়েছে বলে জানা গেছে।
গতকাল ৩০ মে রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পার্থী মোস্তফা গোলাম কবির কাপ-প্রিচ মার্কা ও এনামুল হোসাইনের দোয়াত-কলম মার্কার সমর্থকদের মধ্যে কাকচিড়া ইউনিয়নের কাটাখালী নামক স্হানে এবং পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্স এর সামনে দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। পরে পাথরঘাটা থানার ওসি আল মামুনের নেত্বৃতে পুলিশ ঘটনা স্হলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
হামলায় আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি কৃতরা হলেন এনামুল হোসাইন, যুবলীগ নেতা ফয়সাল আহম্মেদ, মোঃ সোলাইমান, শাহ আলী, সবুজ গাজী, তানভীর আহম্মেদ, ছাত্রলীগ নেতা মোঃ আহাদ, মোঃ রাকিব ও রুবেল মিয়া, হাসান রাব্বি।
দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী এনামুল হোসাইন অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচন শুরু থেকেই কাকচিড়া ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টুর ছেলে রাজন আহম্মেদ কাপ-প্রিচ মার্কার পক্ষ নিয়ে আমার লোকজনকে ভয়ভীতি প্রদার্শন করছে এবং দোয়াত-কলম প্রতীকের প্রচার অফিস ভাংচুর করে। আজ একই ষ্টাইলে মোটরসাইকেল মহরা দিয়ে রাজন তার লোকজন নিয়ে আমার কাকচিড়া ইউনিয়নের নির্বাচনী প্রচার অফিস ভাংচুর চালায়। খবর পেয়ে আমি কিছু কর্মী নিয়ে সেখানে গেলে আমার ওপরে হামলা করে রাজন আমাকে আহত করে। পরে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে আমাকে পাথরঘাটা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
এ ব্যাপারে প্রতিদ্বন্দী চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তফা গোলাম কবির জানান, গতকাল বিকালে কাকচিড়া ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামে তার কর্মী সমর্থক এবং এনামুলের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটির সময় একটু হতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিষয়টি তাৎক্ষনিক ভাবে স্থানীয়রা মিট করে দেয়। তার পরেও এনামুল সন্ধার পরে তার লোকজন ও বাহিনী নিয়ে ওই এলাকায় আমার লোকজনকে মারধর করেছে। তাদের মধ্যে শাহআলী ও রাকিবকে পাথরঘাটা হাসপাতালে ভর্তি করালে সেখানে আমার লোকজন দেখতে যায়। এ সময় এনামুলের সমর্থকরা পুনরায় আমাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। এসময় এনামুল বাহিনীর হামলা প্রতিহত করতে গেলে উভয় পক্ষের প্রায় ৩০ জন ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে মামলার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। এই ঘটনায় পুলিশ ৯ জনকে আটক করেছে তারা প্রত্যকেই এনামুল বাহিনীর সদস্য। পুলিশের কাছে ধরা পড়া হলো ১) নাঈমুল ইসলাম (২৯) পিতা- ইসমাইল খান, সাং- বাইপেল পোঃ সাভার ক্যান্টনমেন্ট, থানা-আশুলিয়া, জেল- ঢাকা, ২) মোঃ মনির হোসেন (৩০), পিতা- আয়নাল খন্দকার, সাং- নিজলাঠিমারা, ৩) মোঃ মিজান (২৫), পিতা- মোয়াজ্জেম হোসেন, সাং-ছোট টেংরা, ৪) মোঃ ইব্রাহীম (২৫), পিতা-আঃ ছালাম হাং, সাং-তাফালবাড়িয়া, ৫) শাহাদাৎ (২৪) পিতা-মোঃ ইসমাইল হাওলাদার, সাং- তাফালবাড়িয়া, ৬) আবু মুছা (২৬) পিতা জাকির হোসেন, সাং- ছহেরাবাদ, ৭) মোঃ হাবিবুর রহমান (২৫), পিতা- নবী হোসেন, সাং- দক্ষিন জ্ঞানপাড়া, ৮) মোঃ শান্ত (২৩) পিতা-কবির হোসেন, সাং-৭ নং ওয়ার্ড পাথরঘাটা পৌরসভা, ৯) মোঃ খোকন (৩৮) পিতা-আঃ হাকিম গোমস্তা, সাং-দক্ষিণ জ্ঞানপাড়া।
পাথরঘাটা হাসপাতালের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, প্রার্থী এনামুল ভর্তি হওয়ার পর মোস্তফা গোলাম কবিরের সমর্থক দু’জনকে ভর্তি করাতে গেলে আহতদের দেখতে উভয় পক্ষের লোকজন পাথরঘাটা হাসপাতালে জড়ো হয়। এক পর্যায়ে হাসপাতালের মধ্যেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। এতে অনেকেই রক্তাক্ত আহত হয়েছে। ৩০ মিনিট ধরে সংঘর্ষ চলার পর পুলিশ এসে উভয় পক্ষের ওপর লাঠিচার্জ করে সবাইকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পাথরঘাটা থানার ওসি আল মামুন বলেন, এই ঘটনা যাতে নির্বাচনের ওপর প্রভাব না পরে সে কারনে এই মারামারির সাথে যারা জড়িত তাদের আটকের ব্যাপারে চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় এপর্যন্ত হামলার সঙ্গে জড়িত ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযান চলমান রয়েছে।
উলেখ্য, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এই উপজেলায় ২৯ মে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ঘূর্ণিঝড় রিমালে কারনে তা স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশন আগামী ৯ জুন ভোট গ্রহনের দিন ধার্য করেছে বলে পরিপত্রে জানানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন