স্বরূপকাঠি (পিরোজপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬ মে, ২০২৪, ০৯:২৬ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

স্বরূপকাঠিতে হকের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি (নেছারাবাদ) উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল হকের সমর্থক ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এতে এলাকায়  চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এক পর্যায়ে মিয়ারহাট বন্দরের দোকানপাট বন্ধ করে দেয় ব্যবসায়ীরা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। ওই এলাকায় যে কোন ধরনের সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

জানা গেছে, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল হকের আনারশ প্রতীকের সমর্থনে সুটিয়াকাঠি ইউনিয়নের বয়েজ স্কুল মাঠে বুধবার বিকেলে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা নিয়াজ মোর্শেদ তালুকদার এর নেতৃত্বে একটা গ্রুপ এবং আরেক ছাত্রলীগ নেতা শুভ বেপারীর নেতৃত্বে আরেকটি গ্রুপ অংশ নিয়ে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালায়। রাতে সভা শেষে প্রার্থী আব্দুল হক তার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে মিয়ারহাট বন্দরের দিকে রওয়ানা হন। পথিমধ্যে মাঝিবাড়ি এলাকায় পৌছুলে তার সামনেই নিয়াজ গ্রুপ এবং শুভ গ্রুপের ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি এবং হাতাহাতি শুরু হয়। এসময় প্রার্থী আব্দুল হক তাদেরকে নিভৃত করেন। পরে তিনি উভয় পক্ষকে নিয়ে বিষয়টা সমাধানের জন্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. ওয়াহিদুজ্জামান এবং সুটিয়াকাঠি ইউপি চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিন অসীমকে দায়িত্ব দেন। বৃহস্পতিবার সকালে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ওয়াহিদুজ্জামান ও ইউপি চেয়ারম্যান অসীমসহ এলাকার কয়েকজন গন্যমান্য ব্যক্তিরা উভয় গ্রুপের কর্মীদের নিয়ে বৈঠকে বসে তাদেরকে নির্বাচন পর্যন্ত যে যার অবস্থানে থেকে নির্বাচনের কাজ চালিয়ে যেতে বলেন। নির্বাচনের পরে বিষয়টি নিয়ে বসা হবে বলে জানিয়ে তারা বৈঠক শেষ করেন। এর ঘন্টাখানিক পরে পুনরায় দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। তারা মিয়ারহাট বন্দরের একে অপরকে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় লিপ্ত হন। এক পর্যায়ে বন্দরের ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানপাট বন্ধ করে দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

একটি গ্রুপের নেতৃত্বে থাকা ছাত্রলীগ নেতা শুভ বেপারী জানান, বুধবার রাতে আনারস প্রতিকের সভা শেষ করে প্রার্থী আব্দুল হকের সাথে ফেরার সময় একই প্রার্থীর সমর্থক ছাত্রলীগ নেতা নিয়াজ সহ তার কর্মিরা তাদেরকে ধাক্কাধাক্কি করে এবং তার চাচাতো ভাই নিরবকে মেরে আহত করে। ঘটনাটি নিয়ে আজকে সিনিয়ররা একটা বৈঠক করে সবাইকে শান্ত থাকতে বললেও নিয়াজের লোকজন সেটাকে অমান্য করে তাদেরকে মারার জন্য বাজারে ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে।

অপরদিকে অন্য গ্রুপের নেতৃত্বে থাকা উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ তালুকদার জানায়, বুধবার রাতের ঘটনা নিয়ে বৈঠকে সিনিয়ররা নির্বাচনের পরে এ নিয়ে বসবেন জানিয়ে সবাইকে শান্ত থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু শুভর লোকজন সেটা অমান্য করে বাজারে বসে তার কর্মী ফারদিন, লাজিব, রাকিবসহ কয়েকজনকে মেরে আহত করেছেন। তাই আমি আমার কর্মিদের নিয়ে মিয়ারহাট বাজারে গিয়ে এর প্রতিবাদ জানানোর চেষ্টা করি।

বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, দুই গ্রুপের মধ্যে একটা সমস্যা দেখা দিয়েছিলো এখন সেটা কেটে গিয়েছে।

এ বিষয়ে নেছারাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) এইচ এম শাহিন জানায়, নির্বাচনেকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল হকের সমর্থিত দুটি গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছিলো। আমি সহ নেছারাবাদ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনি। বর্তমানে সেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

মন্তব্য করুন