
প্রকাশিত: ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ০৮:৫৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে আদম ব্যপারীর খপ্পরে পড়ে দুই পরিবার সর্বশান্ত হয়ে এখন পথে বসেছে। প্রতারিত পরিবার দু‘টি এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী করে স্থানীয় থানায় পৃথক দু‘টি অভিযোগ দেন। গত সোমবার অভিযোগ দু‘টি থানায় জমা দেওয়ার পর দু‘দিন অতিবাহিত হলেও কোন ব্যবস্থা পরিলক্ষিত না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগিরা।
ভুক্তভোগী পরিবার দু‘টি হল- উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের নরেঙ্গাবাদ গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে শাহারুল ইসলাম ওরফে সায়েল (২৮) ও একই উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের গোসাইপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সোবাহানের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩২)।
সায়েল জানান, উপজেলা সিংজানী গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে দুবাই প্রবাসী সাইফুল ইসলামের সাথে প্রতিবেশী মামা আবু দিনকাপের মেয়ে লাকীর বিবাহ হয়। সেই সম্পর্কে সাইফুল আমার মামাত ভগ্নিপতি। আমি পেশায় একজন মুদির দোকানী ছিলাম। স্থানীয় সাহেবগঞ্জ বাজারে আমার একটি মুদির দোকান ছিল। আমার ব্যবসা বেশ ভালই চলছিল। কিন্তু সৌদিতে ভালো বেতনে চাকুরির প্রলোভন দেয় তারা।এক পর্যায়ে এজন্য তাদের সঙ্গে আমার ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা চুক্তি হয়। তার মধ্যে মুদির দোকান ও ৪টি গরুসহ সহায়-সম্পত্তি বিক্রি করে সাইফুল ও তার স্ত্রী লাকী বেগমকে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগি সায়েলের স্ত্রী রুনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, তার স্বামীকে প্রায় বছর খানেক আগে সৌদিতে পাঠানোর উদ্দেশ্যে ঢাকা এয়ারপোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাকে দু‘মাস মেয়াদী দুবাইয়ের একটি ভ্রমণ ভিসা দেওয়া হয়। এয়ারপোর্টে বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ায় সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে আসে সায়েল।এরপর প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও তাকে সৌদিতে পাঠানো হচ্ছেনা।এমনকি টাকাও ফিরে দিচ্ছেনা।
এছাড়াও, এই প্রবাসি সাইফুল ইসলামের খপ্পরে পড়ে শরিফুল নামে আরেক যুবকের পরিবার সর্বশান্ত হয়ে পথে বসেছে।শরিফুল ইসলামের অভিযোগ, তারা স্বামী-স্ত্রী রাজধানীর একটি পোশাক কারখানায় চাকুরি করতেন। গ্রাম প্রতিবেশির আত্মীয়তার সুযোগে তাকে ভালো বেতনে
সৌদিতে পাঠানোর প্রলোভন দেয় সাইফুল। এক পর্যায়ে তার সঙ্গে সাইফুলের সাড়ে ৫ লাখ টাকার চুক্তি হয়। চুক্তিকৃত টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর তারা আর সৌদিতেও পাঠাচ্ছেনা- টাকাও ফিরে দিচ্ছেনা।
প্রতারিত শরিফুলের স্ত্রী লিপি বেগম জানান, সহায়-সম্বল বিক্রি করে ও চড়া সুদে টাকা নিয়ে আদম ব্যাপারী সাইফুল ও তার স্ত্রীকে দিয়ে মহাবিপাকে পড়েছেন।এক দিকে পেটে নাই ভাত, অন্যদিকে পাওনাদারদের চাপে দিশেহারা তারা।তবে প্রবাসি সাইফুলের স্ত্রী লাকী বেগম সৌদিতে
পাঠানোর কথা বলে শাহারুল ও শরিফুলের নিকট থেকে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, সামনে ঈদে তার স্বামী দেশে এসে তাদের টাকা দিয়ে দিবেন। উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আ.র.ম শরিফুল ইসলাম জজ এ ঘটনায়স প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন।
এ প্রসঙ্গে, গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল আলম শাহ্ জানান, উপরোক্ত ঘটনায় ২২ এপ্রিল রাতে শরিফুল ও শাহারুল ইসলামের সাক্ষরিত দু‘টি অভিযোগ পাওয়া গেছে।পৃথক অভিযোগ দু‘টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন