প্রকাশিত: ৬ ঘন্টা আগে, ০২:০৫ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

সেনবাগের রিয়াদ গুলশানে ১ কোটি টাকার চাঁদাবাজির গ্রেপ্তারে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি

 

মোঃ ইব্রাহিম সেনবাগ নোয়াখালী প্রতিনিধি :

ঢাকার গুলশান এলাকায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ধরা পড়েছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। চক্রটির নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ তথাকথিত নেতা আব্দুর রাজ্জাক সোলায়মান ওরফে রিয়াদ নামে। তার বাড়ি নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ৯ নম্বর নবীপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নবীপুর বাজারের দক্ষিণ পাশে বেপারী বাড়িতে। রিয়াদের পিতাসহ ও পিতা একসময় দিনমজুর বা কখনো রিকশাচালক-এমন জীবন থেকেই রিয়াদের উত্থান হয় ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর হঠাৎ করেই বদলে যেতে থাকে তার জীবন। সাধারণ পোশাকের জায়গায় চলে আসে দামি ব্র্যান্ডের শার্ট-প্যান্ট, তৈরি হচ্ছে  দৃষ্টিনন্দন ডুপ্লেক্স বাড়ি, এবারের ঈদে একাই কোরবানি দেন লাখ টাকার গরু-যা তাদের পরিবারের ইতিহাসে প্রথম চলাফেরা রাজকীয়ভাবে চলছে 

‎গত ২৬ জুলাই বিকেলে গুলশান থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে রিয়াদসহ পাঁচজনকে আটক করে। তারা গিয়েছিল গুলশানের এক সাবেক মহিলা সংসদ সদস্যের বাসায়। নিজেদের পরিচয় দেয়—‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর একটি সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের সমন্বয়ক হিসেবে, এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজন ১ কোটি ১০ লাখ টাকা। বাড়ির কর্তৃপক্ষ সন্দেহ প্রকাশ করলে বিষয়টি জানানো হয় পুলিশকে। গুলশান থানা পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকেই রিয়াদসহ পাঁচজনকে আটক করে। জব্দ করা হয় ভুয়া রশিদ বই, পরিচয়পত্র, মোবাইল ফোন ও চাঁদা আদায়ের একটি তালিকা রিয়াদ নিজেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা মহানগর শাখার সিনিয়র সংগঠক’ পরিচয় দিলেও পুলিশ জানিয়েছে, এই সংগঠনটির কোনো সরকারি স্বীকৃতি, নিবন্ধন বা কার্যকর কাঠামো নেই। দীর্ঘদিন ধরে তারা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ভয়ভীতি, আন্দোলন, পদযাত্রা ও অবরোধের হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করে আসছিল।‎রিয়াদ ছিলো এই চক্রের মূল পরিকল্পনাকারী ও সমন্বয়কারী। তার পরিকল্পনায় বিভিন্ন এলাকায় দপ্তর খোলার নাম করে চাঁদা আদায়ের মিশনে নামতো তাদের দল। ‎গুলশান থানা সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়েছে। রিয়াদ ও তার সহযোগীদের অতীত রেকর্ড খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া, এই চক্রের পেছনে কোনো রাজনৈতিক আশ্রয় বা অর্থনৈতিক মদদদাতা রয়েছে কিনা, তা তদন্ত সাপেক্ষে দেখা হবে। রোববার ( ২৭ জুলাই ) চাঁদাবাজির এঘটনার প্রেক্ষিতে এ প্রতিবেদক অনুসন্ধানে সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসী বলেন, রিয়াদের এই হঠাৎ উত্থান নিয়ে বহুদিন ধরেই সন্দেহ প্রকাশ করে আসছিলেন। তাদের ভাষ্যমতে, রিয়াদের আয়-উপার্জনের কোনো দৃশ্যমান উৎস ছিল না। অথচ খুব অল্প সময়েই তিনি প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন, পরিচয় দেন নিজেকে একজন ছাত্রনেতা ও সমাজসেবক হিসেবে। ‎সেনবাগের নবীপুর ইউনিয়নের বাসিন্দারা আরো বলেন, “আমরাই তো বারবার বলেছিলাম, ছেলেটার এই উত্থান স্বাভাবিক নয়। আজ প্রমাণ মিলেছে।”তারা জানান, কোনো চাকরি, ব্যবসা বা রাজনৈতিক প্রভাব ছাড়া এত অল্প সময়ে এত সম্পদ, এত ক্ষমতা—এটা আগে থেকেই সন্দেহজনক ছিল।

মন্তব্য করুন