ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল, ২০২৪, ০৭:০২ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

সন্ধ্যার পর আড্ডা দিলেই ব্যবস্থা নিচ্ছে গ্রাম পুলিশ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

গ্রামগঞ্জে প্রায়ই চোখে মিলবে বাইসাইকেল অথবা ভ্যানে মাইক বেঁধে বিভিন্ন প্রয়োজনে মাইকিং করতে। রবিবার হঠাৎই চোখে পড়ে এক ভিন্ন ধরনের মাইকিং চলছে সকাল থেকে সন্ধা অবধি। কিন্তু এই ঘোষণা কোন হারিয়ে যাওয়া কিংবা কোন খেলা-ধুলার জন্য নয় বরং ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করার জন্যই মূলত করা হচ্ছে এমন প্রচারণা। 

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ৭ নম্বর হাকিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওয়াহিদুজ্জামান ইকু শিকদার এর উদ্যেগে এমন ব্যতিক্রমী জনসচেতনামূলক প্রচারণায় খুশি এলাকাবাসী।

ঐ ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে গ্রামে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে প্রচারণা। গ্রামের ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের লক্ষ্য করে বলা হচ্ছে একটি জরুরি ঘোষণা, এতদ্বারা ৭ নম্বর হাকিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সকল জনসাধারণে অবগতির জন্য জাননো যাচ্ছে যে, অত্র ইউনিয়নে প্রত্যেকটি গ্রামের স্কুল পড়ুয়া যে সকল ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে তাহারা এখন থেকে সন্ধ্যার পরে বাড়িতে বসে লেখা পড়া করবে। প্রয়োজন ব্যাতীত কোনো স্কুল পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী সন্ধ্যার পরে রাস্তা-ঘাটে, হাটে-বাজারে, অলিতে-গলিতে অবস্থিত চায়ের দোকানে বসে, মোবাইল গেইম খেলা, একসাথে বসে আড্ডা দেওয়া, ফেসবুক চালানো, ইমো মেসেঞ্জারে চ্যাটিং করা, অনলাইনে জুয়া খেলা ইত্যাদি কাজে জড়িত থাকতে পারবে না। 

যদি এমন কাজে কেউ জড়িত থাকে তবে প্রত্যেক গ্রামে নিয়োজিত গ্রাম পুলিশ তাহাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়াসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করবে। এমনকি তাহাদের অভিভাবকদের বিরুদ্ধেও প্রশাসনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি স্কুল পড়ুয়া সকল ছাত্র-ছাত্রীকে সন্ধ্যার পরে প্রয়োজন ব্যতীত বাড়ির বাইরে চলাফেরা না করে, বাড়িতে বসে পড়াশোনা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া যাইতেছে। নির্দেশক্রমে চেয়ারম্যান ইকু শিকদার।

এভাবেই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে। এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেওয়ায় এলাকায় প্রশংসার জোয়ারে ভাসছে ইউপি চেয়ারম্যান।

মাদলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেন বলেন, এই মাইকিংয়ের পর থেকে আমরা আর কেউ সন্ধ্যার পর বাইরে থাকি না। এমনকি মোবাইলও দেখি না। আমরা সন্ধ্যার পরপরই পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকি। চেয়ারম্যানের এমন উদ্যোগে আমরাও অনেক খুশি হয়েছি।

মাদলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন বলেন, ইউনিয়নের স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সন্ধ্যার পর আর মোবাইল নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায় না। চেয়ারম্যানের এমন উদ্যোগ নেওয়াতে এলাকাবাসীর উপকারই হয়েছে।

ঐ এলাকার বাসিন্দা কলিমউদ্দিন জানান, আমাদের সন্তানেরা অনেকসময় আমাদের কথাই শুনতে চায় না এর মাঝে এমন একটা আইন করেছে চেয়ারম্যান এতে করে ছেলেপেলেরাও এখন আগের মতো আর সন্ধ্যার পর মোবাইল নিয়ে আড্ডা দিচ্ছে না। চেয়ারম্যানের এমন উদ্যোগ ছড়িয়ে পড়ুক দেশের প্রতিটি গ্রামে।

হাকিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওয়াহিদুজ্জামান ইকু শিকদার বলেন, মোবাইলের কারণে স্কুল পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীসহ যুব সমাজ আজ ধ্বসের দারপ্রান্তে পৌছে গেছে। আমার শুধু এই জনসচেতনামূলক প্রচারণার মাধ্যমে সকল মানুষকে সচেতন করছি।

মন্তব্য করুন