
প্রকাশিত: ৪ ঘন্টা আগে, ০৮:৪৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
আনোয়ার হোসেন যশোর জেলা প্রতিনিধিঃ
বেনাপোল কাস্টমস হাউসে কর্মবিরতি কাস্টমস কর্মকর্তাদের লাগাতার কর্মবিরতির কারণে আমদানিকৃত পণ্য শুল্কায়নের কাজসহ বন্দর থেকে খালাস প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেছে। শুল্কায়নের কাজ বন্ধ থাকায় স্থবির হয়ে পড়েছে বেনাপোল কাস্টমস হাউস। কর্মবিরতিতে পণ্য খালাস নিতে না পারায় প্রতিদিন বন্দরের ভাড়া গুনতে হচ্ছে আমদানিকারকদের। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। তবে যাত্রী চলাচল ও বন্দরে ভারতীয় ট্রাক থেকে পণ্য আনলোড স্বাভাবিক আছে।
আমদানি-রফতানি কার্যক্রম প্রতিদিন সকাল থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত চলার পর তা আবার বন্ধ হয়ে যায়।গতকাল বুধবারও (২১শে মে) একই অবস্থায় চলেছে কার্যক্রম। সকাল থেকে সরেজমিনে দেখা গেছে, কাস্টমস হাউস খোলা আছে। তবে অধিকাংশ টেবিল খালি। কর্মকর্তারা বাইরে ঘোরাঘুরি করছেন। কিছু কর্মকর্তা আসনে থাকলেও দরজা বন্ধ কোনও কাজ করছেন না। বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে ২টা পর্যন্ত আমদানি-রফতানি বাণিজ্য স্বাভাবিক থাকলেও ২টার পর থেকে তাহা বন্ধ। তবে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক চলছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জারিকৃত অধ্যাদেশ বাতিল ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানকে অপসারণসহ চার দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের জাতীয় রাজস্ব ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ স্বাক্ষরিত প্রেসনোটে জানানো হয়েছে, গতকাল২১মে বুধবার প্রেস ব্রিফিংয়ের পর লাগাতার অসহযোগ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দাবিসমূহের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি দেওয়া হবে। ওই দিন এনবিআর এবং ঢাকা ও ঢাকার বাইরে স্ব-স্ব দফতরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। তবে রফতানি ও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা আওতামুক্ত থাকবে। আগামী শনিবার ও রবিবার কাস্টম হাউস এবং এলসি স্টেশনসমূহ ব্যতীত ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দফতরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি চলবে। এই দুদিন কাস্টমস হাউস এবং এলসি স্টেশন সমূহ সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। তবে, রফতানি ও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে। আগামী ২৬ শে মে থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ব্যতীত ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দফতরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি চলবে।
ভারতীয় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট বলছে, বাংলাদেশ থেকে পণ্য রফতানি হলে ভারত থেকে আমদানি কেন হবে না। আইন হলে দুটোই বন্ধ হবে এই অজুহাতে তারা রফতানি পণ্য নিতে অস্বীকৃতি জানায়। সে কারণে আমদানি-রফতানি কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে রয়েছে।
এদিকেগতকাল২১শে মে বুধবার দুপুরের পর থেকে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে শুল্কায়নের কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এ ঘোষণার পর থেকে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে শুল্কায়নের সব ধরনের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায়। গত ১৪ই মে থেকে ১৯ মে পর্যন্ত এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা কলম বিরতির কারণে অন্যান্য শুল্ক হাউসের মতো বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তারাও কলম বিরতি পালন করে আসছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, ‘কাস্টমস কর্মকর্তাদের লাগাতার কর্মবিরতির কারণে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে শুল্কায়ন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারণে স্হল বন্দর থেকে পণ্য খালাস হচ্ছে না। আর পণ্য খালাস না হওয়ার কারণে আমদানিকারকদের প্রতিদিন স্হল বন্দরের ভাড়া গুনতে হচ্ছে। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আমদানিকার গন । প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সরকার।
বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, ‘কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি সত্ত্বেও স্হল বন্দর দিয়ে বেলা ২টা পর্যন্ত দুই দেশের আমদানি-রফতানি স্বাভাবিক ছিল। তবে ২টার পর থেকে ভারতীয় বন্দর ব্যবহারকারীরা আমদানি পণ্য না নিলে রফতানি পণ্য নেবেন না বলে রফতানি বন্ধ করে দেন।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার এইচ এম শরিফুল হাসান কাস্টমস কর্মকর্তাদের লাগাতার কর্মবিরতির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত পোষণ করে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে কর্মবিরতি পালন করছি।
মন্তব্য করুন