প্রকাশিত: ৫ ঘন্টা আগে, ১১:৩৬ এ এম

অনলাইন সংস্করণ

চবির ইতিহাসে সর্ববৃহৎ সমাবর্তন আজ

 

চবি প্রতিনিধিঃ

পাহাড়-সবুজে ঘেরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আজ (১৪ মে) উদযাপন করতে যাচ্ছে তাদের পঞ্চম সমাবর্তন, যা দেশের ইতিহাসে একক কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় সমাবর্তন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। 

নয় বছর পর আয়োজিত এই সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছেন ২৩ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী।

সমাবর্তনের মূল মঞ্চে প্রধান আকর্ষণ হিসেবে থাকছেন চবির প্রাক্তন শিক্ষক, নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রাক্তন এই শিক্ষককে দেওয়া হবে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লিটারেচার (ডি-লিট)’ ডিগ্রি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, চবির ৫৮ বছরের ইতিহাসে এবারই সর্ববৃহৎ পরিসরে আয়োজন করা হয়েছে এই সমাবর্তন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে তৈরি করা হয়েছে দেড় লাখ স্কয়ার ফিটের বিশেষ প্যান্ডেল, যার নির্মাণ ব্যয় প্রায় তিন কোটি টাকা। 

পুরো আয়োজনের বাজেট প্রায় ১৪ কোটি টাকা, যার মধ্যে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ফি থেকে সংগৃহীত হয়েছে ৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে শুরু করে প্রতিটি অনুষদ, আবাসিক হল ও প্রশাসনিক ভবন সেজেছে লাল-নীল আলোকসজ্জায়। রাস্তার পাশে ফুটেছে রঙ-বেরঙের কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া ও সোনালু ফুল। পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে বইছে উৎসবের আমেজ।

সমাবর্তনে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষার্থী, প্রাক্তন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অতিথিসহ প্রায় এক লাখ মানুষ। সকাল ছয়টা থেকে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে ১০০টি বাস শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে আনছে। 

এছাড়া এবার সম্মানিত হচ্ছেন ৪২ জন পিএইচডি ডিগ্রিধারী ও ৩৩ জন এমফিল ডিগ্রিধারী।

চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইয়াহইয়া আখতার বলেন, ‘এবারের সমাবর্তন শুধু চবির নয়, দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যতিক্রমধর্মী ও বিশাল পরিসরের এক অনুষ্ঠান। এতে আমাদের প্রাক্তন শিক্ষক ড. ইউনূসকে ডিলিট প্রদান করতে পারা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের।’

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও সমাবর্তন আয়োজন কমিটির সদস্য সচিব ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটোয়ারী বলেন, ‘১৪ মে চবির ইতিহাসে স্মরণীয় একটি দিন হয়ে থাকবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘সমাবর্তন উপলক্ষে ক্যাম্পাসে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।’

১৯৬৬ সালে যাত্রা শুরু করা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পর্যন্ত চারটি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে—১৯৯৪, ১৯৯৯, ২০০৮ এবং সর্বশেষ ২০১৬ সালে। এবারের সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছেন ২০১১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা ২২ হাজার ৫৬০ জন শিক্ষার্থী। 

অনুষদভিত্তিক অংশগ্রহণের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদে ৪ হাজার ৯৮৭ জন, ব্যবসায় প্রশাসনে ৪ হাজার ৫৯৬ জন, সমাজবিজ্ঞানে ৪ হাজার ১৫৮ জন এবং বিজ্ঞান অনুষদে ২ হাজার ৭৬৭ জন।

প্রায় এক দশক পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিয় প্রাঙ্গণে ফিরে আসছেন হাজার হাজার প্রাক্তন শিক্ষার্থী। কেউ আসছেন মা-বাবার হাত ধরে, কেউবা স্ত্রী-সন্তান নিয়ে। ক্যাম্পাসজুড়ে এখন উৎসব, আবেগ আর গর্বের এক অনন্য সমাবর্তনের দিন।

 

মন্তব্য করুন