
প্রকাশিত: ২ জুন, ২০২৪, ০৯:৩৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
বিগত কয়েকমাস ধরে ব্রিটেনের বাঙালি পাড়ায় একের পর এক অভিযান পরিচালনা করছে ব্রিটিশ পুলিশ। এতে চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বাংলাদেশী আশ্রয়প্রার্থীরা। ব্রিটেনে আশ্রয়প্রার্থীদের তালিকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। ব্রিটেন ও বাংলাদেশ ফাস্ট ট্র্যাক
রিটার্ন চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। এই চুক্তির আওতায় অ্যাসাইলাম আবেদন প্রত্যাখান হওয়া নাগরিকদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। ছাত্র, ওয়ার্কার বা ভিজিটর ভিসায় গিয়ে অ্যাসাইলাম আবেদনকারী বাংলাদেশিদের জন্য এটি একটি বড় রকমের দুঃসংবাদ।
চলতি সপ্তাহে লন্ডনে যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্র বিষয়ক যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ এই ফিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়। গত ১৬ মে এমন ঘোষণা দেয় ব্রিটিশ হোম অফিস।
হোম অফিস বলছে, ব্যর্থ আশ্রয়প্রার্থী বিদেশি নাগরিক এবং ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও ব্রিটেনে থাকা ব্যক্তিদের শিগগিরই ফেরত পাঠানো হবে। বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসায় ২০২৩ সালে প্রায় ১১ হাজার বাংলাদেশি ব্রিটেনে প্রবেশ করে। ১২ মাসের মধ্যেই তারা আশ্রয়ের আবেদন করেন।
দ্যা টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন বলছে, আশ্রয় চেয়ে ব্রিটেনে ঢোকার ‘পেছনের দরজা’ কাজে লাগাতে গত বছরের মার্চ পর্যন্ত ছাত্র, শ্রমিক বা ভিজিটর ভিসায় এসেছিলেন এসব অভিবাসী।
এর মধ্যে যে সকল শিক্ষার্থী সেখানে গিয়েই পড়াশোনা চলমান না রেখে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য অ্যাসাইলাম আবেদন করেছেন এবং ওয়ার্কার বা ভিজিটররাও অ্যাসাইলাম আবেদন করেছেন, তাদেরও আবেদন প্রত্যাখান করা হয়েছে।
ব্রিটেনের অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধ প্রতিমন্ত্রী টমলিনসন বলেন, লোকজনের আসা-যাওয়া ঠেকাতে আমাদের পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে বিদেশিদের অপসারণ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা। বাংলাদেশ আমাদের মূল্যবান অংশীদার। এটি চমৎকার যে, আমরা এই বিষয়সহ অন্যান্য বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক জোরদার করছি। আমরা ইতোমধ্যেই স্পষ্ট প্রমাণ দেখেছি, এসব চুক্তি অবৈধ অভিবাসনের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক সমস্যাগুলোর জন্য বৈশ্বিক সমাধান প্রয়োজন। সবারজন্য একটি ন্যায্য ব্যবস্থা তৈরিতে আমি বাংলাদেশ ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছি।
এদিকে টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভিসা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য যুক্তরাজ্যে থাকার অনুমতি দেয়-সেটা সাধারণত কয়েক মাস।
কিন্তু অনির্দিষ্টকালের জন্য আশ্রয়প্রার্থীদের এখানে থাকার সম্ভাবনা প্রবল। কারণ হোম অফিস মানবাধিকার আইনের জন্য তাদের ফেরত পাঠাতে বিশাল বাধার সম্মুখীন হয়।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরেই ব্রিটেনে থাকা অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করে তাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ব্রিটিশ সরকারকে সহযোগিতা করে আসছে। এ কারণে ব্রিটেনে বর্তমানে অবৈধ বাংলাদেশিদের সংখ্যা অনেক কম। খুশির খবর হচ্ছে ব্রিটেনে অবৈধদের তালিকায় বাংলাদেশ শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে নেই। ব্রেক্সিটের পরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হওয়ায় আবারো নতুন করে ব্রিটেনের সাথে এ বিষয়ে চুক্তি সম্পন্ন হলো।
এদিকে ব্রিটেনে অবৈধ অভিবাসী ধরার জন্য হোম অফিস প্রতিদিন রেইড দিচ্ছে। অবৈধভাবে ব্রিটেনে বসবাসকারীদের ঠেকাতে তাদের আটক করে রোয়ান্ডায় পাঠানোর আইন পাশ হয়েছে পার্লামেন্টে। এতে অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। কারণ জনবহুল রাস্তায় ফেসিয়াল
রিকগনিশন ক্যামেরা বসিয়ে ধরা হচ্ছে তাদের। এছাড়া বাসা বাড়ি ছাড়া বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে রেইড দিয়ে অবৈধ অভিবাসীদের আটকও বেড়ে গিয়েছে।
মন্তব্য করুন