
প্রকাশিত: ২৩ মার্চ, ২০২৪, ০৭:৪৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
তিন দফা সময় বাড়িয়েও সুনামগঞ্জের হাওরের বোরো ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করা যায়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড দাবি করছে বাঁধের কাজ ৯৮ শতাংশ শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তবে বিভিন্ন বাঁধে মাটির কাজ করছে এখনো। কমপেকশন, দুর্বাঘাস লাগানো এবং জিওটেক্স লাগানোর কাজও শেষ হয়নি বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। যেসকল বাঁধের কাজ শেষ হয়ে গেছে সেসব বাঁধে নামেমাত্র মাটি দিয়ে দায়সারা কাজ করে চলে গেছে বলে অভিযোগ কৃষকদের। কৃষকের স্বার্থে সরকার সুনামগঞ্জের হাওরসহ হাওরাঞ্চলের বোরো ফসল রক্ষায় বাঁধের কাজে নীতিমালা পরিবর্তনসহ অঢেল অর্থ ছাড় দিলেও কাজ চলছে পুরোনো আদলেই। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠন থেকে শুরু করে সঠিক সময়ে কাজ শেষ না করা এবং মাটি ফেলার কাজে অনিয়মসহ নানা অভিযোগ উঠছে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে। মাটি বদলে বালি দিয়ে বাঁধ নির্মান করতেও দেখা গেছে। জেলার ১২ উপজেলার মধ্যে জামালগঞ্জ ও ধর্মপাশা উপজেলার বাঁধের কাজ পিছিয়ে আছে এখনো। হাওরের বিভিন্ন বাঁধে এখনো মাটির কাজ করছে প্রকল্প বাস্তবায়স কমিটির সদস্যরা। কোথাও কোথাও প্রকল্পের কমপেকশন, দুর্বাঘাস লাগানো ও জিওটেক্স এখনো বসানো হয়নি। বাঁধে দুর্বাঘাস লাগানো ও কমপেকশন করা হয়নি। এছাড়াও এই দুই উপজেলার হাওরের যেসব বাঁধের কাজ সমাপ্ত হয়ে গেছে সেসব বাঁধের কাজ নিয়ে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। নামে মাত্র মাটি ফেলা হয়েছে। পুরনো বাঁধের উপর অল্প মাটি ফেলে অর্থ উত্তোলন করে নেয়ার অভিযোগ করেছেন কৃষকরা।
নীতিমালা অনুযায়ী গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হাওরের ৭৩৫টি প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল। ১৫ ডিসেম্বর থেকে কাজ শুরুর নির্দেশনা থাকলেও যথামসময়ে কাজ শুরু হয়নি। এবার ১৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৯১ কিলোমিটার অস্থায়ী ফসলরক্ষা বাঁধ সংস্কার, নির্মাণ ও পুনঃনির্মাণ করা হচ্ছে। হাওরে বোরো ফসলরক্ষায় বাঁধের কাজের মান নিয়ে কৃষকরা চরম বিক্ষুব্ধ। জানালেন দায়সারাভাবে কাজ করে চলে গেছে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির লোকজন। জেলার ধর্মপাশা উপজেলার রাজাপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মতিন জানান,আমরার হাওরে যেভাবে মাটি ফেলা হয়েছে অল্প বৃষ্টি হলেই ধ্বসে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। অপরদিকে জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা ও তাহিরপুর উপজেলায় বাঁধের কাজ অনেক পিছিয়ে আছে।
তাহিরপুর উপজেলার সোলেমানপুর গ্রামের কৃষক কৃপেশ দাস বলেন,আমাদের এলাকার বাঁধের কাজ এখনো বাকি আছে। এসব কাজ দ্রুত শেষ না করলে আগাম বন্যায় ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।
কৃষকদের অধিকার আদায়কারী সংগঠন হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতাও ক্ষোভের সহিত জানালেন, যারা বাঁধের কাজ তদারকি করবে তারা হাওরে যান না। ফলে বাঁধের কাজ যত্রতত্র হচ্ছে।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রশাসন দাবি করছে কাজ শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তবে এখনো অনেক কাজ বাকি আছে। তিনি বলেন এবার যদি বাঁধের জন্য ফসলের কোন ক্ষতি হয় আমরা বৃহৎ আন্দোলনে যাবো।
হাওরে বাঁধের কাজ সরজমিনে পরিদর্শনে এসে সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ড মহা পরিচালক আমিনুল হক ভুইয়া বললেন, যারা যেখানে কাজ নিয়ে অভিযোগ করছেন আমরা সেখানে সাথে সাথে ঠিক করে দিচ্ছি।
মন্তব্য করুন