
প্রকাশিত: ১৫ জুন, ২০২৪, ০২:২৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আবদুর রহমানের বাসার লিফটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এক পরিচালককে আরেক কর্মকর্তার মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় রাজধানীর শাহাবাগ থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাতে রাজধানীর পরীবাগের দিগন্ত টাওয়ারে মন্ত্রীর বাসার লিফটে এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার (১৪ জুন) রাতে শাহাবাগ থানায় হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়। এ ঘটনার পর ‘হামলাকারী’ কর্মকর্তা আজিজুল ইসলামের নতুন পদায়ন বাতিল করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী কর্মকর্তা হলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) মলয় কুমার শূর। আর যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি অধিদপ্তরের জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (লিভ, ডেপুটেশন অ্যান্ড ট্রেনিং রিজার্ভ) আজিজুল ইসলাম।
আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে গত শুক্রবার এজাহার দাখিল করেন মলয় কুমার। সেটি মামলায় রূপান্তর করা হয়েছে বলে গত শুক্রবার রাতে। মালার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাজিরুর রহমান। আসামি আজিজুলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
এজাহারে উল্লেখ করা তথ্য অনুযায়ী, প্রশাসনিক বিষয়ে দিকনির্দেশনার জন্য প্রাণিসম্পদমন্ত্রী তার বাসভবন দিগন্ত টাওয়ারে মলয় কুমারকে আসতে বলেছিলেন। পরে বৃহস্পতিবার রাত সোয়া আটটার সময় মন্ত্রীর বাসায় যান তিনি। কাজ শেষে সোয়া নয়টার দিকে টাওয়ারের লিফটে নিচতলায় নামেন।
এজাহারে বলা হয়, আজিজুল লিফটের সামনে আগে থেকেই ভারী কোনো বস্তু নিয়ে অবস্থান করছিলেন। লিফটের দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে মলয় শূরকে ধাক্কা দিয়ে লিফটের ভেতর ফেলে দেন তিনি। হত্যার উদ্দেশ্যে মাথা ও নাকে আঘাত করে জখম করেন। মলয় চিৎকার করলে নিরাপত্তাপ্রহরীরা এগিয়ে আসেন। তখন ভয়ভীতি দেখিয়ে ও জীবননাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যান আজিজুল। এরপর মলয়কে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। তার মুখমণ্ডল ফেটে যাওয়ায় সেলাই দিতে হয়েছে ও স্থায়ী ক্ষত হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এ ছাড়া বুক ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়েছে।
জানতে চাইলে মলয় কুমার রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, "মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা শেষে ফেরার পথে লিফট থেকে নামতে যাব, তখনই আজিজুল আমাকে অতর্কিত আক্রমণ করেন। হত্যার উদ্দেশ্যে কোনো ভোঁতা বস্তু দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন।"
এ বিষয়ে কথা বলতে আজিজুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করা হয়। তবে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
হামলার সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে মলয় শূর বলেন, "আজিজুল ইসলামকে মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার পরিচালক পদমর্যাদার একটি পদে পদায়ন করে। যেহেতু তিনি (মলয়) প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন), তাই এ বিষয়ে মন্ত্রীকে মতামত দিয়েছিলেন। বিভাগীয় মামলায় শাস্তিপ্রাপ্ত অবস্থায় আজিজুলের নতুন পদায়ন হয়। আইন অনুযায়ী তিনি কথা বলেছেন। এটা কারও পক্ষে যেতে পারে, বিপক্ষেও যেতে পারে। এ কারণে আজিজুল তার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে থাকতে পারেন।"
এ বিষয়ে কথা বলতে মন্ত্রী আবদুর রহমানকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
ঘটনাটি সম্পর্কে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, "শুনেছি একজন কর্মকর্তাকে আরেকজন কর্মকর্তা মেরেছেন। একজন কর্মকর্তা আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে এ বিষয়ে লিখিত প্রতিবেদন চেয়েছি। প্রতিবেদন পেলে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হামলার ঘটনার প্রতিবেদন দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
মন্তব্য করুন