
প্রকাশিত: ৩ ঘন্টা আগে, ০৬:৩৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি:
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভাগনে, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য,নীলফামারী ১(ডোমার-ডিমলা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন বলেছেন,এই সরকার সংস্কারের কথা বলছেন।সরকারসহ পত্র-পত্রিকা ও বিএনপির বিরোধী যারা আছেন তারা বলছেন বিএনপি নাকি সংস্কার চাননা।কিন্তু আপনারা যদি অতিত থেকে দেখেন বিএনপি প্রথম দল যে,৩১ দফা সংস্কারের প্রস্তাব ঘোষণা করেছিলেন।দুর্ভাগ্য আজকে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার হচ্ছে।অনেক ধরণের চক্রান্ত হচ্ছে যাতে বিএনপি ক্ষমতায় আসতে না পারে।গত ১৮ বছর চক্রান্ত করে বিএনপিকে আটকাতে পারেনি ইনশাআল্লাহ সামনেও আটকাতে পারবেনা।আমরা দেখছি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার তারাও নির্বাচন নিয়ে নানান তালবাহানা শুরু করেছেন।বিএনপি সর্বাত্মক ভাবে এই সরকারকে সমর্থন করে যাচ্ছে এবং বিএনপি সর্বাত্মক এই সরকারকে সমর্থন করে যাবে যতক্ষণ না পর্যন্ত সরকার সঠিক পথে নিয়ে একটা গণতান্ত্রিক পন্থায় নির্বাচন দিচ্ছেন।কিন্তু এটার যদি ব্যত্যয় হয় তাহলে অতিত থেকে আপনারা শিক্ষা নেন।এই সরকারের ভিতরে কিছু ভূত আছে,তারা অনেক রকম চিন্তা করছে।দেশে আজকে করিডোরের চিন্তা করছে মায়ানমারের জন্য।এটা যদি করেও দেশের মানুষের ও রাজনৈতিক দল গুলোর সাথে আলোচনা ছাড়া তাহলে দেশে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মত পরিবেশ হতে পারে।আমরা চাইনা গত ১৬ বছরে আমরা যে অত্যাচার থেকে বেড়িয়ে এসেছি আবার কোনো কুচক্রী মহলের ক্ষমতা ধরে রাখার লোভে দেশটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত হোক এবং নির্বাচনটা পিছিয়ে যাক।শেখ হাসিনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,আল্লাহর মাইর দুনিয়ার বাইর।ভাত তৈরি কিন্তু ভাত খাওয়ার সুযোগ পায়নি,খাওয়া রেখেই পালাতে হয়েছে।পক্ষান্তরে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া,যাকে তারা তিলে তিলে হত্যা করতে চেয়েছিলো।যার কোনো অন্যায় নেই,যাকে একটি ভুয়া অর্থ আত্মসাতের মামলা দিয়েছিলো।যেই টাকা আত্মসাত হয়নি সে টাকার মিথ্যে মামলা দিয়ে তাকে ছয় বছর কারাবন্দী করে রেখেছিলেন।এমন কি তাকে বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে হত্যা করতে চেয়েছিলো যার কারণে তিনি প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে যান।আমাদের নেতাকর্মীরা হামলা-মামলা,গুম,খুনসহ বিভিন্ন ভাবে অত্যাচারিত হয়েছেন।কেউ কেউ বছরের পর বছর বাড়িতে ঘুমাতে পারেনি।এটাতো দেশের শাসন ব্যবস্থা হতে পারেনা।আমরা ওই শাসন ব্যবস্থাকে ধিক্কার জানাই।আমরা চাই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এদেশে ফিরে আসুক।নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সরকার গঠিত হোক।যত তারাতারি তা সম্ভব হবে তত তারাতারি আমরা আপনাদের কাছে সু-ব্যবস্থা-সু শাসন ফিরিয়ে দিতে চেষ্টা করব।দীর্ঘ ১৮ বছর পর রোববার(১৮ মে)শেষ বিকেলে তার নির্বাচনী এলাকা নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলা সদরের ডিমলা ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে উপজেলা বিএনপির আয়োজনে গণসংবর্ধনা ও জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ মনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান রানা এবং সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানী প্রধানের সঞ্চালনায় এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,জেলা বিএনপির সভাপতি আ.খ.ম আলমগীর সরকার,বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম,উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আরিফ-উল ইসলাম লিটন।এসময় নেতাকর্মীদের উদ্যেশ্যে তুহিন বলেন,আপনারা সজাগ থাকুন,সচেতন থাকুন,গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে যদি প্রয়োজন হয় যদি আমাদেরকে দল নির্দেশ দেয় তাহলে আমরা আবার প্রয়োজনে রাস্তায় নামবো।১৯৭৫ সালে এ দেশে যখন গণতন্ত্র ধ্বংস করে দিয়েছিলো,আওয়ামী লীগ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলো,আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়েছিলো।তাও আবার অন্য কোনো দলের দ্বারা নয়,আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেছিলো।তারাই তাদের দলকে নিষিদ্ধ করেছিলো এবং বাকশাল গঠন করেছিলো।জামায়াতে ইসলামকে তারা নিষিদ্ধ করেছিলো,জাসদকে তারা নিষিদ্ধ করেছিলো,সকল রাজনৈতিক দলকে তারা নিষিদ্ধ করেছিলো।পত্র-পত্রিকা তারা নিষিদ্ধ করেছিলো শুধুমাত্র চারটি জাতীয় দৈনিক বাদে।যারা শুধু সরকারের কথা শুনতো।
শহীদ জিয়াউর রহমান সেখান থেকে আমাদের দেশকে বহু দলীয় গণতন্ত্রের মধ্যে ফিরিয়ে এনেছেন।তিনি বলেন,গত ১৬ বছরে আমরা স্বাধীন ভাবে মত প্রকাশ করতে পারিনি,আমরা স্বাধীন ভাবে চলতে পারিনি।এ দেশের বেশির ভাগ মানুষ ধার্মিক,মুসলিম,ধর্মভিরু।তাই বলে তারা ধর্মান্ধ নয়,আমরা ধর্মান্ধ মুসলমান নই।আমরা ইসলামের নামে কোনো রাজনীতি করিনা।ধর্ম যার-যার রাষ্ট্র আমাদের সবার।এই মর্মে বিএনপি বিশ্বাস করেন,শহীদ জিয়াউর রহমান বিশ্বাস করতেন,খালেদা জিয়া বিশ্বাস করেন,তারেক রহমান বিশ্বাস করেন।গত ১৬ বছর যেই অত্যাচার,যেই নিপীড়নের মধ্যদিয়ে বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের বা বিএনপির সহযোগী যেসব দল ছিলেন সেই ১৬ বছরে তারেক রহমান নিজে শারিরীক ভাবে অত্যাচারিত হওয়ার পরও উনি বিদেশে বসে দলকে যেভাবে সংগঠিত করেছেন এটা অচিন্তন।
উল্লেখ্য:দেড় যুগ দেশের বাহিরে থাকার পর ২২ এপ্রিল সাবেক এমপি তুহিন দেশে ফিরেন। এরপর গত ২৯ এপ্রিল সকালে কর ফাঁকির মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ-৯ কবির উদ্দিন প্রামাণিকের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেছিলেন।পরে শুনানি শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন।একইদিন অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ প্রদীপ কুমার রায়ের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি।এ মামলাতেও শুনানি শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেছিলেন।পরে তুহিনের নিঃশর্ত মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানসহ নীলফামারী জেলা বিএনপি,জেলার ছয় উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা টানা ৭ মে পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেন।এরপর ৮ মে তার আপিল শুনানিতে হাইকোর্ট তার অন্তবর্তীকালিন জামিন প্রদান করেন।
মন্তব্য করুন