
প্রকাশিত: ১১ ঘন্টা আগে, ০৪:২২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
জুয়েল রানা নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার পাকুটিয়া ইউনিয়নের রাথুরা গ্রামে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীর গোপনে বিয়ের ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। জন্মসনদ ও ইউনিয়ন পরিষদের প্রত্যয়নপত্র অনুযায়ী, কনের জন্ম ২০১০ সালের ১৫ জানুয়ারি, যা স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে তার বয়স মাত্র ১৫ বছর। আইন অনুযায়ী এটি একটি বাল্যবিবাহ এবং সম্পূর্ণ বেআইনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় কনের পিতৃবাড়িতে বর ও কনের পরিবারের সম্মতিতে গোপনে বিয়ের আয়োজন করা হয়। বর মিজানুর রহমানের বয়স আনুমানিক ১৭ বছর এবং তিনি সদ্য সমাপ্ত এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন। তিনি পাকুটিয়া ইউনিয়নের আউটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। পাকুটিয়া ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাজী আবু বকর সিদ্দিক খানের নেতৃত্বে বিয়েটি সম্পন্ন হয়।
সাক্ষীদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করা হলেও, সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে কাজী আবু বকর সিদ্দিক খান বলেন,“আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না। এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ।”
এদিকে, এলাকাবাসীর অভিযোগ—এই কাজী পূর্বেও বেশ কয়েকটি বিয়েতে বয়স যাচাই না করে দায়িত্ব পালন করেছেন বলে তারা ধারণা করেন। তাদের দাবি, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, মেয়েটির পরিবার গরিব হওয়ায় কাজীর পরামর্শেই তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। পরিবারের সদস্যরা নাকি বলেছেন—“আমরা গরিব মানুষ, কাজীর কথা শুনেই মেয়েটাকে আগেই বিয়ে দিয়ে দিয়েছি। এত কিছু ভাবার সুযোগ ছিল না।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাকুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সিদ্দিকুর রহমান মুঠোফোনে বলেন,“আমি ঘটনাটি আগে জানতাম না। যদি মেয়েটির জন্মসনদ অনুযায়ী বয়স ১৮ বছরের নিচে হয়, তাহলে এটি সম্পূর্ণ বেআইনি। আমি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
এখনো পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭’ অনুযায়ী, ১৮ বছরের নিচে কোনো কন্যাশিশুর এবং ২১ বছরের নিচে কোনো পাত্রের বিয়ে সম্পন্ন করা আইনত দণ্ডনীয়। এই ধরনের বিয়েতে জড়িত বা সহায়তা করলে দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।
এলাকাবাসীর দাবি, এই ঘটনাটি যেন অবহেলায় ধামাচাপা না পড়ে। যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক—এটাই এখন সবার দাবি।
মন্তব্য করুন