প্রকাশিত: ৬ ঘন্টা আগে, ০৯:৫০ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

একটি সেতুর অভাবে

 

 

জুয়েল রানা নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি:

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ভাদ্রা ইউনিয়নের কাওনহোলা এলাকায় একটি পাকা সেতুর অভাবে দীর্ঘদিন ধরে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সরকারি কোনো স্থায়ী সেতু না থাকায় ২০১৯ সালে এলাকাবাসী নিজেদের অর্থায়নে ও স্বেচ্ছাশ্রমে ২৬০ ফুট দীর্ঘ একটি বাঁশ-কাঠের সেতু নির্মাণ করেন। বর্তমানে এই অস্থায়ী সেতুটি দিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করছেন ২৪ টি গ্রামের হাজারো মানুষ।

 

সেতুটি মেঘনা বনগ্রাম বাজার থেকে কাওনহোলা হয়ে ধুবড়িয়া ইউনিয়নের সেহরাইল সড়কে অবস্থিত। এটি স্থানীয় কৃষিকাজ, শিক্ষা, চিকিৎসা ও নিত্য প্রয়োজনীয় চলাচলের একমাত্র মাধ্যম হলেও বাঁশ ও কাঠের তৈরি হওয়ায় এটি টেকসই নয় এবং বেশ ঝুঁকিপূর্ণ।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটি আপাতত ব্যবহারের উপযোগী থাকলেও এর কাঠামো নড়বড়ে এবং যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এলাকাবাসী জানায়, বর্ষা মৌসুমে সেতুতে চলাচল আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।

 

স্থানীয় কাওনহোলা জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা আব্দুল কাদের বলেন,“এই সেতু দিয়েই মুসল্লি, শিক্ষার্থী, রোগী—সবাই যাতায়াত করে। বর্ষার সময় সেতু ও রাস্তায় হাঁটাও সম্ভব হয় না। এমনকি মৃতদেহ দাফনেও কষ্ট হয়। আমরা চাই, এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণ হোক।”

 

একজন স্থানীয় দোকানদার জানান,“প্রতিদিন মালামাল আনতে-নিতে এই সেতু ও রাস্তা ব্যবহার করি। বর্ষায় অবস্থা এত খারাপ হয় যে, মাল আনা-নেওয়াই বন্ধ হয়ে যায়। সেতুটি পুরনো হয়ে গেছে, যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে। আমরা খুব কষ্টে আছি। সরকার যদি একটি পাকা সেতু করে দিত, তাহলে জীবন ও ব্যবসা অনেক সহজ হতো।”

 

স্থানীয়দের দাবি,“দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর যেন আর কোনো বিলম্ব না হয়। দ্রুত একটি পাকা সেতু ও সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে ২৪টি গ্রামের মানুষের ভোগান্তির স্থায়ী অবসান ঘটানো হোক।”

 

ভাদ্রা ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য লুৎফর রহমান বাবুল বলেন,“এলাকাবাসীর উদ্যোগে নির্মিত এই বাঁশ-কাঠের সেতুই এখন একমাত্র ভরসা। তবে পাকা সেতু না থাকায় ও সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে মানুষ এখনও চরম দুর্ভোগে ভুগছে। আমরা একাধিকবার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছি।”

 

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী এলজিইডি মোঃ তোরাপ আলী বলেন,“ধুবড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ অফিস হতে বনগ্রাম বাজার হয়ে সেহরাইল পর্যন্ত প্রায় ২,৩০০ মিটার রাস্তা এবং কাওনহোলা খালের ওপর ৪০ মিটার দীর্ঘ একটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করে আমরা ২৩ অক্টোবর ২০২৪ সালে এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে পাঠিয়েছি। এটি ‘অনূর্ধ্ব ১০০ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ প্রকল্প’-এর আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে আমরা দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু করব।” 

মন্তব্য করুন