
প্রকাশিত: ৩ ঘন্টা আগে, ০১:৪১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
সদরুল আইনঃ
স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা দিতে বাংলাদেশে লাইসেন্স পেতে সবুজ সংকেত পেয়েছে ইলন মাস্কের স্পেসএক্স পরিচালিত স্টারলিংক।
বিটিআরসি ইতোমধ্যে অনুমোদনের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।
টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ী, লাইসেন্স প্রদানের পূর্বে বিটিআরসিকে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হয়। গত সপ্তাহে এই চিঠি পাঠানো হয় বলে জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো. এমদাদ উল বারী।
তিনি বলেন, ‘আমরা গত সপ্তাহেই পূর্বানুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। অনুমোদন পেলেই নির্ধারিত ফি নিয়ে লাইসেন্স ইস্যু করা হবে।’
নথি অনুযায়ী, স্টারলিংক সার্ভিসেস বাংলাদেশ লিমিটেড বিটিআরসির ‘নন-জিওস্টেশনারি অরবিট (এনজিএসও) স্যাটেলাইট সার্ভিসেস অপারেটরদের জন্য নির্দেশিকা’ অনুযায়ী গত ৭ এপ্রিল লাইসেন্সের আবেদন করে।
কোম্পানির নিবন্ধনে উল্লেখ রয়েছে, তাদের স্থানীয় অফিস ঢাকার কারওয়ান বাজারে একটি ভবনে অবস্থিত।
স্টারলিংকের আবেদন পাওয়ার পর বিটিআরসি সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে যা নথিপত্র যাচাই করে এবং লাইসেন্সের জন্য সুপারিশ করে। পরে বিটিআরসির দুই সদস্যের একটি দল কোম্পানির অফিস পরিদর্শন করে এবং একই সুপারিশ দেয়।
বিটিআরসির একজন কর্মকর্তা জানান, এ ধরনের লাইসেন্সের ক্ষেত্রে এটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দ্রুততম সুপারিশ।
গত মার্চে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুস সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে স্টারলিংকের বাণিজ্যিক উদ্বোধন ৯০ দিনের মধ্যে নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, স্টারলিংক ২০২১ সাল থেকে বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশের চেষ্টা করছে। বিটিআরসি গত বছর এপ্রিল মাসে স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবার জন্য নির্দেশিকা তৈরির লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠনের অনুমোদন দেয়।
খসড়া তৈরি হয় ২০২৪ সালের অক্টোবরে এবং চূড়ান্ত নির্দেশিকা জারি হয় চলতি বছরের মার্চের শেষ দিকে।
এর আগে, ২৯ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এই কোম্পানিটি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) থেকে দেশে কার্যক্রম শুরুর অনুমোদন পায়।
বর্তমানে স্টারলিংক ৬,০০০-এর বেশি স্যাটেলাইট পরিচালনা করছে এবং বিশ্বজুড়ে তিন মিলিয়নের বেশি ব্যবহারকারীকে সেবা দিচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি বিশেষত দুর্গম ও স্বল্প সেবা প্রাপ্ত এলাকায় উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড সেবা দিতে সক্ষম।
বিশ্বজুড়ে স্টারলিংকের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছে অ্যামাজনের প্রজেক্ট কুইপার, ওয়ানওয়েব ও টেলিস্যাটের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো, যারা লো-আর্থ-অরবিট কনস্টেলেশন গড়ে তুলছে।
বাজারভেদে স্টারলিংকের সেবার মূল্য ভিন্ন। যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণ আবাসিক সংযোগের জন্য প্রতি মাসে প্রায় ১২০ ডলার খরচ হয়। আফ্রিকার কিছু অংশে এটি ভর্তুকিযুক্তভাবে ৩০-৪০ ডলারে নামিয়ে আনা হয়েছে।
তবে, স্যাটেলাইট ডিশ ও রাউটারসহ প্রাথমিক সরঞ্জামের খরচ ২০০ থেকে ৫০০ ডলারের মধ্যে পড়ে, যা এখনো অনেকের জন্য একটি বড় বাধা।
শিল্প বিশ্লেষকরা মনে করছেন, স্টারলিংকের সাফল্য অনেকটাই নির্ভর করবে সরকারের নীতিমালা, মূল্য নির্ধারণ কৌশল এবং স্থানীয় বাস্তবতার ওপর।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন পেলেই স্টারলিংক কয়েক মাসের মধ্যেই বাংলাদেশে সেবা চালু করতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে। এটি দেশের ডিজিটাল সংযোগের লক্ষ্য অর্জনে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে।
মন্তব্য করুন