প্রকাশিত: ৩ জুন, ২০২৫, ১০:৫২ এ এম

অনলাইন সংস্করণ

হাটহাজারীতে রেললাইনের ওপর গরুর হাট, ঝুঁকিতে যাত্রীরা

 


মোঃ একরামুল হক, হাটহাজারী প্রতিনিধি:

চট্টগ্রামের হাটহাজারী রেলস্টেশন এলাকায় প্রতিবছরের মতো এবারও কোরবানির পশুর হাট বসেছে সরাসরি রেললাইনের ওপর। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা ও আপত্তি সত্ত্বেও এই ঝুঁকিপূর্ণ হাট চালু রয়েছে, যা বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় ও রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বারবার আপত্তি জানালেও বাজার ইজারাদাররা রেললাইনের ওপর হাট বসিয়ে চলেছেন। রেল স্টেশন এলাকায় প্রাচীর না থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতারা অবাধে লাইনের পাশে পশু নিয়ে অবস্থান করছেন। অনেকে রেল লাইনের স্লিপারের ওপরই পশু বেঁধে রাখছেন। এতে রেললাইনের পাথর ছিটকে পড়ছে এবং ট্রেন চলাচলও ঝুঁকিতে পড়ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পশু ব্যবসায়ীরা নিজেরাও স্বীকার করছেন যে রেললাইনের পাশ ঘেঁষে পশু নিয়ে অবস্থান করা ঝুঁকিপূর্ণ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বিক্রেতা জানান, যেহেতু সরকার ইজারা দিয়েছে এবং রাজস্ব নিচ্ছে, তাই নির্দিষ্ট ও নিরাপদ জায়গা নির্ধারণ করাই উচিত। তবে বাজার পরিচালনায় ইজারাদারদের দায়িত্বহীনতা স্পষ্ট বলেও অভিযোগ তাদের।

এ বিষয়ে ইজারাদার ইব্রাহিম সওদাগর গণমাধ্যমকে বলেন, “আমরা কয়েকজন মিলে হাটটি ইজারা নিয়েছি।” বিস্তারিত জানতে তিনি অন্য ইজারাদার মো. রিয়াদ উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

রিয়াদ উদ্দিন জানান, “আমরা মোট ১৬ জন মিলে এই হাটের ইজারা নিয়েছি। আমাদের স্বেচ্ছাসেবক দল নিয়মিত বিক্রেতাদের সতর্ক করছে যাতে কেউ রেললাইনে পশু না বেঁধে রাখে। কেউ ভুল করে বেঁধে রাখলেও আমরা সরিয়ে দিচ্ছি।”

হাটহাজারী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার জয়নাল আবেদীন বলেন, “এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমরা উর্ধ্বতন দপ্তরে লিখিতভাবে জানিয়েছি।”

চট্টগ্রাম রেলওয়ের ষোলশহর ফাঁড়ির ইনচার্জ আবুল কাশেম জানান, স্টেশন মাস্টারের মাধ্যমে এই বিষয়ে বিভিন্ন বিভাগে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

এদিকে হাটহাজারী পৌরসভার প্রশাসক শাহেদ আরমান বলেন, “সরকারি নির্দেশনা রয়েছে—রাস্তাঘাট ও রেললাইনে কোনো পশুর হাট বসানো যাবে না। এ বিষয়ে হাট পরিচালনাকারীদের সতর্ক করা হয়েছে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম মশিউজ্জামান বলেন, “রেললাইন কিংবা মহাসড়কের পাশ ঘেঁষে পশুর হাট বসানোর অনুমতি নেই। যেহেতু এই হাটটি পৌরসভার আওতাভুক্ত, তাই পৌর প্রশাসককে জানানো হয়েছে এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

অন্যদিকে, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও রবিবার সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে তাকে পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য করুন