প্রকাশিত: ৬ নভেম্বার, ২০২৪, ০৮:২৩ এ এম

অনলাইন সংস্করণ

যার স্বপ্নের আয়তন যত বড় তার সাফল্যের আয়তন তত বড়

 

মিজান আজাদ
লেখক ও গবেষক,
       যুক্তরাষ্ট্র।

যার স্বপ্নের আয়তন যত বড় তার সাফল্যের আয়তন তত বড়! সাফল্যের জন্য চাই বিশ্বাস, ক্লান্তিহীন স্বপ্ন, মুক্ত স্বাধীন চিন্তা আর উদ্যম বাসনা। 

সাফল্যের যাত্রা পথে ধর্মের বাধ্যবাধকতা, ধর্মীয় বিধি-নিষেধ, উৎপীড়ন-নিপীড়ন আর বিশ্বাস-অবিশ্বাসের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধির দরকার আছে কি?

শুধুমাত্র ধর্মই অনুসৃত সাফল্যের সূচক আর জাতির একমাত্র মুক্তির পথ হতে পারে না। ধার্মিক রাষ্ট্র তার নগরিকদের ধর্মান্ধ এবং অসহনশীল করে তোলে। ধর্মান্ধ জনগোষ্ঠীকে প্রাকৃতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা কঠিন।  সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে প্রয়োজন ঘরে ঘরে মনুষ্যত্ব অর্জনের চর্চা করা। 

আবার ধার্মিক রাষ্ট্রের নামে ধর্ম ব্যবসা, ধর্ম-নীতি, ধর্ম-সংস্কৃতি, ধর্মের নামে অতিরঞ্জিত জীবন পদ্ধতি, ধর্মের তাবিজ কোন সমাজেই গ্রহণযোগ্য নয়। ধর্মের সংঘাত থেকে মানব মনীষীদেরও মুক্তি মেলেনি।

 ইবনে রুশদ, ইবনে সিনার মতো দার্শনিকগণকে ধর্মের রোষানলে পড়তে হয়েছিলো। ব্রুনো-কে পুড়িয়েই মারা হয়, গ্যালিলিও ধর্মের সাথে সংঘাত এড়িয়ে নিজেকে রক্ষা করেছিলেন ঠিকই কিন্তু তার আগেই পৃথিবীকে সূর্যের চারপাশে ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন। 

যা ছিলো "মহাবিশ্বে পৃথিবী এবং মানুষই একমাত্র সৃষ্টির মূলকেন্দ্র", সেই বিশ্বাসের উপর চরম আঘাত।

 ধর্মেরও প্রয়োজন আছে। ধর্মের অবমাননা, অবহেলা করা অমানুষের লক্ষণ। ধর্ম মনের লাল দীপ্তি! লাল ময়ূখ যা মানুষের অন্তরে সরল বিশ্বাসে জ্বলে উঠে। ধর্ম জাতির মেরুদন্ডকে সোজা রাখতে, মানুষের মনুষ্যত্ব আর বিবেকের জাগরণ ঘটাতে কাজ করে।

 সেই মনুষ্যত্ব জাগানোর অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির দ্বায়িত্ব রাষ্ট্রের। নিউটন ঈশ্বরকে একজন মহান স্রষ্টা হিসেবে দেখেছেন। নিউটনই প্রতিষ্ঠিত করে গিয়েছেন, পৃথিবী এবং মহাবিশ্বের সকল বস্তু একই প্রাকৃতিক নিয়মের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে।

 তাঁর মতে, "সবকিছু নিয়মে বন্দী, এমনকি স্বয়ং ঈশ্বরও নিয়মে বন্দী"! 

মানুষ কারো লক্ষ্য হাসিলের জীব নয়, মানুষ নিজেই তাঁর লক্ষ্য এবং সকল জীবের সেরা। মানুষের মধ্যে প্রখর যুক্তি-জ্ঞান, শিল্প-ভাবনা, নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রকেই কাজ করতে হবে। দেশের সকল নাগরিক সুশিক্ষায় বিশ্ব নাগরিক হিসেবে বেড়ে উঠুক! 

মেধা মননের সর্বোচ্চ বিকাশ--- এই হোক রাষ্ট্রের সাধনা। আমারা চাই ধর্মের সাইবোর্ড ব্যতীত রাষ্ট্রের দীনহীন, ইশ্বরবিহীন মানুষটিও মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকুক। তাঁর সন্তানেরা সুশিক্ষা ও সুস্বাস্থের অধিকার ভোগ করুক!  

তাঁর স্বপ্নের আয়তন আলোর মত সরল পথে বিস্তৃত হোক। ধর্মের আড়াআড়ি-বাড়াবাড়ি বন্ধ হোক!

মন্তব্য করুন