
প্রকাশিত: ৯ অক্টোবার, ২০২৪, ০৪:১৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
প্রতিনিধি মানিক মিয়া:
সিলেট কোম্পানীগঞ্জের লাছুখাল বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় দীর্ঘ ৩ বছর ধরে বন্ধ পাঠদান ও শিক্ষা কার্যক্রম। স্কুলটি ২০১০ সালের দিকে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথমে চারজন শিক্ষক দিয়ে কার্যক্রম শুরু হয় এবং প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পান আব্দুল মুকিত, সহকারী শিক্ষিকারা হলেন সালমা বেগম, আছিয়া বেগম, সাবিনা আক্তার। ২০১০ থেকে ১১ সালে, স্কুলে শিক্ষার পাঠদান ভালোভাবে চলতে থাকে।
স্মরণ কালের ভয়াবহ গত ২০২২ সালের বন্যার কারণে স্কুলের ১ তলা বিল্ডিংটি পানির ব্যাপক স্রোতের কারণে নষ্ট হয় স্কুলের জরুরি আসবাব যেমন চেয়ার টেবিল বেঞ্চ ইত্যাদি। পানিতে ভেসে যায় বাদবাকি সামগ্রী নষ্ট হয় এরপর স্কুলটির শিক্ষা কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
এলাকাবাসীর সাথে আলাপকালে জানা যায় প্রায় তিন বছর যাবত প্রতিষ্ঠানটি অকার্যকর অবস্থায়,নেই শিক্ষার পাঠদান বৃহত্তর লাছুখাল ও শিলেরভাঙা দুটি গ্রামের প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা ছিল এই স্কুলে।
দীর্ঘদিন যাবত স্কুলটি বন্ধ থাকার কারনে প্রায় অন্ধকারে কোমলমতি, শিশুরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত তারা। এলাকাবাসীর দাবি স্কুলটিতে নিয়োজিত শিক্ষকদের একটা সম্মানী এলাকা হতে উত্তোলন করে দেয়া হতো তবু্ও তাদের উদাসীনতায় আজ প্রতিষ্ঠানটি চরমভাবে একাগ্রতা আর নিভৃতে কাঁদছে।
স্কুলের ভুমি দাতা সাবেক সভাপতি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির নেতা হাজী আব্দুল মনাফ, আক্ষেপের সহিত বলেন, আমার চোখের সামনে আমাদের স্কুলের পরের স্কুলগুলো সরকারীকরণ ও বিল্ডিং হলো
অথচ আমরা এই স্কুলের কোন উন্নয়ন করতে পারিনি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাসিম,বলেন যখন শিক্ষকরা কিছুটা সম্মানীর টাকা পেতো তখন তারা নিয়মিত ক্লাস করাতেন ছাত্র-ছাত্রীদের আমরা আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত এবং ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি বন্ধ হওয়াতে সব কিছুর স্থবিরতা আর শিক্ষকরা ও চলে যান।
সমাজকর্মী সেলিম মিয়া, দৃঢ় আশাবাদী আবারো স্কুলটি চালু হবে আমাদের বাচ্চারা আদর্শ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে আগামীর বাংলাদেশ গড়বে। এদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ প্রধান শিক্ষক আব্দুল মুকিত এর বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও গাফিলতির কারন তাদের দাবি। স্কুলের কার্যক্রম চালাতে আমরা তো শিক্ষকদের পাশে ছিলাম। সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছি ৩বছর ধরে স্কুলটি বন্ধ থাকায় ছাত্র ছাত্রীরা শিক্ষার আলো হতে বঞ্চিত।
দায়িত্বপালনকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল মুকিতের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায়। বুদ্ধিমান সুচতুর হওয়ায় জরুরি কাগজপত্র নিয়ে সে বাড়িতে চলে গেছে। তার কাছে থাকা স্কুলের টাকাও তিনি আত্মসাৎ করেছেন।
যেখানে স্কুলের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় পাসের হার প্রায় ৯০% স্কুলটি আবার চালু করার জন্য তাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে। কিন্তু বারবার শিক্ষক আব্দুল মুকিত এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি আসবেন বলে আসছেন না এনিয়ে চরম হতাশায় নিমজ্জিত অভিভাবক এবং স্কুল কমিটি।
সরেজমিন পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় লাছুখাল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়ে রাজনীতির ও শেষ নেই এখানে কাদা চুরাছড়ি আর নানা জটিলতা। পদ পদবী দায়িত্ব পাওয়া নিয়ে শঙ্কা" আর মতবিরোধ এবং সেই সাথে শিক্ষকদের বেতন বহু সংকটে পতিত এই বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি রেজিস্ট্রেশন করাতেও ব্যর্থতার অভিযোগ পাওয়া যায়।
স্কুলটির জায়গার পরিমাণ দলিলপত্র অনুযায়ী (৬০ শতক বর্তমান বি এস রেকর্ডে পাওয়া গেছে ৩৩ শতক বাদ জায়গা বর্তমান বি এস রেকর্ডে ২৭শতক) খাস খতিয়ানে আছে। লাছুখাল বে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি কামাল মিয়া, জানান আমরা আশাবাদী ছিলাম স্কুলটি জাতীয়করণ হবে তা ও হয়নি নানা সমস্যা জটিলতায় আমাদের কোমলমতি স্কুল পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী আজ সু শিক্ষার আলো থেকে ঝরে পড়ছে। আমরা প্রধান শিক্ষক আব্দুল মুকিত কে বারবার তাগিদ দিলেও কোন কাজ হচ্ছে না তিনি আসছেন না আমাদের বাচ্চাদের অদূর ভবিষ্যত কি হবে.? এ নিয়ে অভিভাবক এলাকাবাসীর চিন্তার শেষ নেই।
মুঠোফানে প্রধান শিক্ষক আব্দুল মুকিত এর বক্তব্য নিতে গেলে তিনি বলেন বিনা বেতনে কে চাকরি করবে। এলাকাবাসীর অভিযোগ আপনার চরম গাফিলতির কারনে তাদের স্কুলটি বন্ধ, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যহত হয়েছে। আপনার কাছে স্কুলের অর্থ ও জরুরী কাগজপত্র জমা আছে স্কুল কমিটি ও অভিভাবকদের দাবী এ প্রসঙ্গ তিনি এড়িয়ে যান এবং (ইউএনও-প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার) তাঁকে এবিষয়ে ডাকলে তিনি আসবেন। এখন তিনি বাজারে আছেন পরে বিস্তারিত আলাপ করবেন বলে মুঠোফোন কল কেটে দেন।
এবিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা টিটু কুমার এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন লাছুখাল বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় আগে নিবন্ধন করা জরুরি, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো আমাদের আওতাধীন।বন্ধ স্কুলটি চালু হলে আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের বই দিয়ে সহায়তা করবো।
মন্তব্য করুন