প্রকাশিত: ৩ ঘন্টা আগে, ০৮:৫০ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

সাবেক ৩ নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত সিইসি ও কমিশনারদের বিরুদ্ধে মামলা করবে বিএনপি

 

সদরুল আইনঃ

দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) অন্যান্য কমিশনারদের বিরুদ্ধে মামলা করবে বিএনপি।

শনিবার (২১ জুন) বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 শায়রুল কবির খান বলেন, বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনারদের বিরুদ্ধে মামলা করবে বিএনপি। রোববার (২২ জুন) সকালে শেরে বাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করতে যাবেন বিএনপির তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল। 
 
এর আগে সোমবার (১৬ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে বিতর্কিত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে একটি কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
 
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ২০১৪ বাংলাদেশে ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনটি নবম জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ অধিকাংশ দলই বর্জন করে এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লিগ ও স্বতন্ত্রসহ ১৭টি দল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। 

এছাড়াও নির্বাচনে ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা বিজয়ী হওয়ায় নির্বাচনটি নিয়ে অনেক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। বিএনপির অভিযোগ ছিল ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিছু কুকুরকে ভোটকেন্দ্রে দেখা গেছে। কোনো মানুষ ভোট দিতে যায়নি।
 
অন্যদিকে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিনের ভোট রাতেই দেয়ার অভিযোগ ছিল বিএনপির। বিএনপিসহ অন্যান্য দলের সাথে দেশের উল্লেখযোগ্য ইসলাম ভিত্তিক রাজনৈতিক দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এককভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও নির্বাচনের দিন দুপুর ২টার সময় দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দলটি নির্বাচন এবং নির্বাচনী ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে।

 এছাড়া রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন না থাকায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ২২ জন প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। তবে নির্বাচনের দিন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান এক বিবৃতিতে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। 

এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী সালমা ইসলাম, বিজেপি আন্দালিব রহমান ভোট বর্জন করেন।
 
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কে এম নুরুল হুদা প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অন্যদিকে কমিশনার ছিলেন রফিকুল ইসলাম, মাহবুব তালুকদার, কবিতা খানম ও শাহাদাত হোসেন চৌধুরী।

আর সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে আমি তুমি আর ডামি নির্বাচন বলে অভিযোগ করে বিএনপি। এই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি।
 
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অন্যদিকে কমিশনার ছিলেন মো. আলমগীর, আনিছুর রহমান, বেগম রাশিদা সুলতানা ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান।
 
আগের নির্বাচন কমিশনগুলো বিএনপির বারবার অনুরোধ স্বত্ত্বেও তাদের কোনো কথা না শুনেই ভোটের আয়োজন করে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং সেনা মোতায়েনের দাবিও ছিল বিএনপির। 

তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ একতরফাভাবে নির্বাচন করে। আর সেই নির্বাচনে সহযোগিতা করে নির্বাচন কমিশন, এমন অভিযোগ ছিল বিএনপির পক্ষ থেকে। 

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এরপর বিভিন্ন সময়ে বিগত তিনটি নির্বাচনের কমিশনারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বিএনপি। এবার ওই নির্বাচনগুলোতে দায়িত্বপালন করা সিইসিসহ অন্য কমিশনারদের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।

মন্তব্য করুন